
দেশে ব্যাংক খাতে চলমান সমস্যার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে দুইটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রম এবং ১৫টি ব্যাংকের লুটের বিষয় আলোচিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ৭টি ব্যাংক সরাসরি লুট হয়েছে, বাকিগুলো পরোক্ষভাবে লুট হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী মিলনায়তনে রবিবার “ব্যাংক খাতের সংকট, সংস্কার ও নিয়ন্ত্রণ” শীর্ষক আলোচনায় ব্যাংকার ও বিশ্লেষকরা এ তথ্য তুলে ধরেন। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনটি আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় (ইউএপি) ও জার্মানির ওটিএইচ অ্যামবার্গ-ওয়েইডেন।
আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, দেশের ব্যাংক খাত সংস্কার একটি জটিল ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। তিনি উল্লেখ করেন, কিছু ব্যাংক দেউলিয়া পর্যায়ে (‘জম্বি ব্যাংক’) হলেও কার্যক্রম চালাচ্ছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে এক পরিবারের সর্বোচ্চ দুজন সদস্য পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবে এবং পরিচালকদের মেয়াদ কমিয়ে ৬ বছর করা প্রয়োজন।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন জানান, দেশের ব্যাংক খাতে মোট ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৪ লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ এবং ৭ লাখ কোটি টাকা সমস্যাপূর্ণ। বর্তমানে ৬০টি ব্যাংকের মধ্যে প্রায় ১৫টি লুট হওয়া বা ঝুঁকিপূর্ণ।
পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল প্রায় ৩.৫ লাখ কোটি টাকা, যা ২০২৫ সালের মার্চে ৪ লাখ কোটি টাকার বেশি এবং জুনে আরও ১.৫ লাখ কোটি টাকা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোতে তারল্যসংকট তৈরি হয়েছে।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং ‘হুইসেলব্লোয়িং’ নীতি শক্তিশালী করতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের সদিচ্ছা ছাড়া ব্যাংক খাতে সুশাসন সম্ভব নয়।