
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল ইউনিয়নের কাজী মাওলানা মো. আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ পড়ানো, অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে।
ভুক্তভোগী মোহাম্মদ রুহুল আমিন সম্প্রতি বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৯ জুলাই পালটি রাজাপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে তানজিনা আক্তার (বয়স ১৬ বছর ৭ মাস) এর বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করেন কাজী আফজাল হোসেন। এছাড়া, ভুক্তভোগীর এক আত্মীয়ের কাবিননামা ইংরেজিতে অনুবাদ করার জন্য তিনি ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, কাজী আফজাল হোসেন অবৈধভাবে বালাম বই ও সিল ব্যবহার করে বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের নামে প্রতারণা করছেন। এসব বিষয়ে আপত্তি জানানোয় তাঁর তিনজন এজেন্টকে বেআইনিভাবে কাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। স্থানীয়দের দাবি, এসব অনিয়মের মাধ্যমে তিনি বিপুল অর্থ উপার্জন করে ঢাকায় সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
কাজীর সহকারী আবুল হোসেন স্বীকার করেছেন, মূল কাজীর নির্দেশে তিনি একাধিক বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করেছেন। তিনি আরও জানান, মূল রেজিস্ট্রার ভলিউম ছাড়াও অতিরিক্ত তিনটি আলাদা ভলিউম ছাপিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
এছাড়া, অভিযোগ রয়েছে যে বিয়ের সনদ (বিবাহ সনদপত্র) ৯০ দিনের মধ্যে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তিনি তা সরবরাহ করেন না। সনদ আনতে গেলে প্রত্যেক দম্পতিকে ১ হাজার টাকা ‘তল্লাশি ফি’ দিতে হয়। অনেক সময় বলা হয়, “আজ হবে না, এক সপ্তাহ পরে আসুন।” এতে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী আফজাল হোসেন সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। নির্দিষ্ট বাল্যবিবাহের নাম ও তারিখ জানতে চাইলে তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
যায়যায়দিন