
মোঃ শাহজাহান বাশার ,স্টাফ রিপোর্টার,
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় “জোর যার, মুল্লুক তার” নীতির মতো করে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা দখলের চেষ্টার শিকার এক রত্নগর্ভা মা এখন নিজের জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শুধু জায়গা দখল নয়, সম্প্রতি তাকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
https://s.daraz.com.bd/s.ZOlcS?cc
ভুক্তভোগী মোসাম্মৎ ফুল বানু, যিনি উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ি পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা ও স্থানীয়ভাবে একজন রত্নগর্ভা মা হিসেবে পরিচিত, শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামী নজরুল ইসলাম মালিকানাধীন জায়গাটি দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিবেশী আওয়ামী লীগ নেতা মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা।
ফুল বানু বলেন, “এই জায়গা আমরা ক্রয় করেছি এবং যথাযথ মালিকানা কাগজপত্র আমাদের রয়েছে। কিন্তু প্রতিপক্ষরা আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে এবং ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এখন তারা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে— যেকোনো সময় আমাদের মেরে ফেলতে পারে।”
ভুক্তভোগী ফুল বানু আরও অভিযোগ করেন, গত বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে তার স্বামীর মালিকানাধীন জায়গায় প্রতিপক্ষরা লাঠি, রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অনধিকার প্রবেশ করে। তারা সীমানা প্রাচীরের সিমেন্টের পিলার এবং বাঁশের বেড়া ভেঙে জায়গা দখলের চেষ্টা চালায়।
এ সময় ফুল বানু ও তার স্বামী বাধা দিলে প্রতিপক্ষরা তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে ফুল বানু চিৎকার করলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। তবে, উপস্থিত জনসম্মুখেই অভিযুক্তরা তাকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এ ঘটনার পর ফুল বানু প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে সিরাজুল ইসলামসহ মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে বুড়িচং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন:মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. হারুনুর রশিদ, মো. বাবুল মিয়া, মো. মোখলেছুর রহমান, মো. রাসেল, নান্টু মিয়া, মো. ইব্রাহিম হোসেন, মো. ইমান হোসেন, মো. ফারুক আহম্মেদ, মো. মিজান, মো. সোহেল, অমিত হাসান, মো. বাবুল মিয়া (পুনরায়), মনির হোসেন (গাজীপুর), মো. শরীফ, মো. জামসেদ, মো. কাজী বাশার, মো. মাসুদ, মো. সুমন এবং মো. হুমায়ুন।
ভুক্তভোগী দম্পতি প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা, দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তারা আরও বলেন, “এরা সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।”
অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন,“আমি ১৪ বছর ধরে আ.লীগের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ছিলাম। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীনও কখনো কাউকে প্রভাবিত করিনি। তাদের সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
বুড়িচং থানা পুলিশের এসআই রাকিব জানান,“অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন। জমি সংক্রান্ত একটি মামলা আদালতে চলমান রয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী ও সচেতন মহল মনে করছেন, যদি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তাহলে যেকোনো সময় বড় ধরনের সহিংসতা ঘটতে পারে।
এএনবি২৪ ডট নেট /মাহামুদুল হাসান কালাম /জাবির
https://s.daraz.com.bd/s.ZOPA3?