তরিকায়ে মাইজভান্ডারীর অলৌকিকতা — ১১ মাস ১২ দিন পরেও সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় মুরিদ, কবর থেকে উত্তোলনে আধ্যাত্মিক স্তম্ভিত ঘটনা

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার

আল্লাহর ওলিরা মরেও মরে না—এই বিশ্বাস আজ আবার প্রমাণিত হলো তরিকায়ে মাইজভান্ডারীর একজন নিবেদিত প্রাণ মুরিদের মাধ্যমে। অলৌকিক এ ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায়। দীর্ঘ ১১ মাস ১২ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয় তরিকায়ে মাইজভান্ডারীর গুণী মুরিদ ডাঃ জাহির মাইজভান্ডারী চরণদ্বীপীকে। আর তখনই দেখা যায়—তাঁর মরদেহ এখনো সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় বিদ্যমান।

গত ১২ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার, তিনি ইন্তেকাল করেন। কবরস্থ করা হয় সুবর্ণচর এলাকায়। কিন্তু মৃত্যুর পরও তিনি পরিবারকে স্বপ্নযোগে একাধিকবার বার্তা দিতে থাকেন। প্রথমে প্রায় ৩ মাস আগে তাঁর তৃতীয় পুত্র দিদারুল ইসলাম স্বপ্নে দেখেন, পিতা কবর থেকে তাঁকে তোলার নির্দেশ দিচ্ছেন, কারণ কবরে পানি জমে তাঁর ইবাদতে বাধা সৃষ্টি করছে।

এরপর কিছুদিনের ব্যবধানে ছোট ছেলে নুরুল আলম একই ধরনের স্বপ্ন দেখতে পান। কিন্তু পরিবার সিদ্ধান্তহীনতায় থাকায় কিছু সময় অতিক্রান্ত হয়। তবে সর্বশেষ পরিবারের একাধিক সদস্য একযোগে এই আধ্যাত্মিক আহ্বান পেয়ে আর দেরি না করে আজ শুক্রবার দিবাগত রাতে তাঁকে কবর থেকে উত্তোলন করে স্থানান্তর করেন।

তুলে আনার মুহূর্তে এলাকার শত শত মানুষ একত্রিত হয়ে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মরদেহে কোনো পচন নেই, বরং শরীর স্থির, চামড়ার উজ্জ্বলতা অক্ষত, এমনকি মুখমণ্ডলে এক অপার্থিব প্রশান্তি ও সৌরভ ছড়াচ্ছিল। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন, কেউ কেউ ‘সুবহানাল্লাহ’ ধ্বনি তুলেন, আবার কেউ কেঁদে কেঁদে বলেন—”এ কেবল ওলিদের ক্ষেত্রেই সম্ভব।”

এই অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে নতুন করে আলোচিত হলো তরিকায়ে মাইজভান্ডারী দর্শনের আধ্যাত্মিক প্রভাব ও গূঢ় তাৎপর্য। যদি একজন সাধারণ মুরিদানের এমন মর্যাদা হয়, তাহলে মহান মাইজভান্ডারী পীরদের মর্যাদা যে কত উচ্চমার্গীয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

এই বিষয়ে কোরআনুল কারীমে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে:

“আলা ইন্না আউলিয়া-আল্লাহি লা খাউফুন আলাইহিম ওয়া-লা হুম ইয়াহযানুন।”
অর্থ: “জেনে রাখ! নিশ্চয়ই আল্লাহর ওলিগণের নেই কোন ভয় এবং না আছে কোন দুশ্চিন্তা।”
— সূরা ইউনুস, আয়াত ৬২

এই অলৌকিক ঘটনাটি শুধু এলাকাবাসী নয়, পুরো মাইজভান্ডারী অনুসারীদের মাঝেও এক গভীর বিশ্বাস ও আত্মিক জাগরণ সৃষ্টি করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাইজভান্ডারী ভক্তরা এসে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।

তরিকায়ে মাইজভান্ডারী শুধু আধ্যাত্মিক শক্তির পথ নয়, এটি ওলি-আউলিয়াদের জীবন্ত নিদর্শন এবং সত্যিকারের ন্যায়ের পথে চলার দিকনির্দেশক। এমন অলৌকিক ঘটনা যেন আমাদের বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করে তোলে এবং পরকালীন জীবনের সত্যতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।