
(একটি চাচার গল্প)
চাচা ‘আলাভোলা’ টাইপের মানুষ ছিলেন—লোকজন তাঁকে ডাকত “আখন্দ চাচা” নামে। মুখে গোফের নিচে সদাই পানের পিক, কাঁধে একটা ঝোলানো গামছা, আর বুকে একরাশ আক্ষেপ। তার ছিল এক অদ্ভুত অভ্যাস—পাড়া দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তিনি আপন মনে বলে উঠতেন:
“এই যে অযাইতা পাড়া! ওই যে নন্ডি পাড়া! আর মুন্নাইয়া পাড়ারে তো জিন্দেগিতেই বেটার বানাইল না!”
লোকজন হাসত, কেউ বলত– “এই বুড়া তো গাইলেই চলে”, কেউ আবার বলত “চাচা মনে হয় ছোটবেলায় ওই পাড়াগুলায় প্রেমে ব্যর্থ হইছিলো!”
আখন্দ চাচা কিছু কইতেন না—একটুখানি হেসে পাশ কাটিয়ে যেতেন।
বছর যায়, সময় পাল্টায়।
পাড়ার নামগুলোরও “সাইনবোর্ড” পাল্টায়—কিন্তু স্বভাব না!অযাইতা পাড়া আজও উন্নয়নের ধারে-কাছে যায় না।
নন্ডি পাড়া এখন কাগজে-কলমে সংগঠন করে, কিন্তু কাজ করে ঠিক উল্টা।
আর মুন্নাইয়া পাড়া—ওখানে যে যার মতো নেতা, এক পাড়ায় দশটা ক্ষমতা!
এখন লোকে একে একে বলতে শুরু করল—
“আরে ভাই, আখন্দ চাচার কথা তো ঠিকই ছিল!”
এখন অনেকেই পেছন ফিরে চাচার সেই কথাগুলোকে বলে,
“ও তো ভবিষ্যৎদ্রষ্টা ছিল ভাই!”
আখন্দ চাচা আজ আর নেই, কিন্তু সমাজ তার কথাগুলোকে আজ মনে করে আর বলে —ভাবছে “গালি নয়, হইত সত্য কইছিলো!”
এই যে সমাজ—এটা বুঝতে শিখছে অনেক দেরিতে… কিন্তু বুঝছে!,,,,,৷ চলবে