
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ৭ মে ২০২৫:
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনা ও যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যাতে কোনো ধরনের উস্কানিমূলক, বিভ্রান্তিকর বা অসত্য বক্তব্য না ছড়ায়, সে বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট মোঃ শাহজাহান বাশার। তিনি শান্তি বজায় রাখার জন্য দেশের সব স্তরের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এবং অনুরোধ করেছেন—এই সংকটময় সময়ে যেন কেউ দায়িত্বজ্ঞানহীন ও প্ররোচনামূলক আচরণ না করে।
মোঃ শাহজাহান বাশার বলেন, “আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও সামরিক দ্বন্দ্বে অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ সরাসরি জড়িত না হলেও, এ ধরনের যুদ্ধ আমাদের অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমাদের উচিত সকল উস্কানিমূলক মতামত, গুজব ও কল্পনাপ্রসূত বক্তব্য থেকে বিরত থাকা।”
তিনি উল্লেখ করেন যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই অতি আবেগে এমন কিছু প্রচার করছেন যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়াতে পারে কিংবা কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে। এ সময় সকলের উচিত তথ্য যাচাই করা, আন্তর্জাতিক বিষয়গুলিকে ঠান্ডা মাথায় বিশ্লেষণ করা এবং রাষ্ট্রীয় অবস্থানকে সম্মান জানানো।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বাংলাদেশের গণমানুষের মতপ্রকাশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। তবে এই মাধ্যমটি সচেতনভাবে ব্যবহার না করলে তা বিভ্রান্তি, গুজব এবং উত্তেজনার মাধ্যমেও পরিণত হতে পারে। শাহজাহান বাশার বলেন, “বিশ্ব রাজনীতির বিষয়ে যেকোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে গেলে আগে জেনে-বুঝে, যাচাই করে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। যেন কারো মনে বিভ্রান্তি বা বিভেদ না ছড়ায়।”
তিনি আরও বলেন, “সাংবাদিক ও মতামতপ্রদানকারীদের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে জাতিকে সঠিক তথ্য দেওয়া এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে অবস্থান নেওয়া।” এসময় তিনি নিজেকেও এই দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দেশের গণমাধ্যম, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সামাজিক প্রভাবশালীদের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা উত্তেজনা না বাড়িয়ে বরং শান্তির পক্ষে কথা বলেন।
বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ এবং সকল আন্তর্জাতিক সমস্যার শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক সমাধান চায়। শাহজাহান বাশার মনে করেন, ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই যদি যুদ্ধের পরিবর্তে সংলাপে বসে, তবে শুধু তাদের জনগণেরই নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের নিরাপত্তা ও অগ্রগতি নিশ্চিত হবে।
তিনি বলেন, “আমরা জানি যুদ্ধ কোনো সমস্যার সমাধান নয়। যুদ্ধ মানেই ধ্বংস, রক্তপাত ও মানবিক বিপর্যয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে আমরা শিখেছি—শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করা দরকার, তবে অন্যের যুদ্ধকে উসকে দিয়ে নিজের দেশকে সংকটে ফেলা কখনো কাম্য নয়।”
প্রতিবেদনের শেষাংশে মোঃ শাহজাহান বাশার বলেন, “আমি সাংবাদিক হিসেবে নয়, একজন সাধারণ বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবেই অনুরোধ জানাচ্ছি—আসুন আমরা শান্তির পথে থাকি। আমাদের বক্তব্য, লেখালেখি ও প্রচারে যেন অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টি না হয়। আমরা যেন যুদ্ধকে উৎসাহিত না করি, বরং শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিই।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সরকার, গণমাধ্যম, সামাজিক নেতৃত্ব, তরুণ প্রজন্ম এবং জনগণ মিলে এই বার্তাটি ছড়িয়ে দেবে: “আমরা যুদ্ধ চাই না—আমরা শান্তি চাই।”