যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অভিবাসন নীতিতে ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত, বিশেষ নিরাপত্তায় ৩ জন

প্রতিবেদন
মো. শাহজাহান বাশার,স্টাফ রিপোর্টার

 মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির আওতায় গত রোববার পর্যন্ত ৩১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ ও একজন নারী রয়েছেন, যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান বা বিভিন্ন অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হওয়ায় দেশে ফিরেছেন। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

ফেরত পাঠানো বাংলাদেশিদের মধ্যে তিনজনকে উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হস্তান্তর করা হয়। মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা তাদের এস্কর্ট করে বাংলাদেশে পৌঁছে দেন। বাকি ২৮ জনকে বাণিজ্যিক ও চার্টার্ড ফ্লাইটে পাঠানো হয়। গত শনিবার একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে পাঁচজন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফেরত পাঠানোর সময় কাউকে হাতকড়া পরানো হয়নি। বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে তাদের সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। কিছু ব্যক্তিকে মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনী বিশেষভাবে এস্কর্ট করেছে, তবে বেশিরভাগই সাধারণ যাত্রী হিসেবে ফিরেছেন।

ফেরত আসা ব্যক্তিদের বিষয়ে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের পুনর্বাসন ও সহায়তা প্রদানের জন্য ব্র্যাকের মতো সংস্থাকে যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই প্রক্রিয়ায় তিনটি সংস্থা জড়িত ছিল:
১. হোমল্যান্ড সিকিউরিটি
২. কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি)
৩. ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)

সম্প্রতি ঢাকায় পুলিশের বিশেষ শাখা ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে ফেরত পাঠানো অভিবাসীদের বিষয়ে একটি সমন্বয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ফেরত পাঠানোর আগেই সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশিদের তথ্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।

এই ফেরত পাঠানোর ঘটনাটি ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির কঠোরতারই প্রতিফলন। বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর এই প্রক্রিয়া আগামীতেও অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফেরত আসা ব্যক্তিদের মধ্যে যারা অপরাধের দায়ে দণ্ডিত, তাদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। অবৈধ অভিবাসন রোধে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আরও সমন্বয় বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে এই ঘটনায়।

বাংলাদেশ সরকার ফেরত আসা নাগরিকদের পুনর্বাসনে কাজ করছে, তবে তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও আলোচনা চলছে।