প্রতিশোধ নয়, ধৈর্যই প্রকৃত বিজয়ের চাবিকাঠি

 

স্টাফ রিপোর্টার: মো. শাহজাহান বাশার, এএনবি২৪ ডট নেট

মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তির মধ্যে প্রতিশোধপরায়ণতা অন্যতম। কেউ আমাদের সঙ্গে অন্যায় করলে, আমাদের ক্ষতি করলে, বা আমাদের অপমান করলে আমরা স্বাভাবিকভাবেই প্রতিশোধ নিতে চাই। কিন্তু প্রকৃতি আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়—পচা ফল কখনো গাছে বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না, এটি এক সময় নিজ থেকেই ঝরে পড়ে।

আমাদের সমাজে প্রতিশোধপরায়ণতার ফলে অনেক অশান্তির সৃষ্টি হয়। ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনেও আমরা এই নেতিবাচক প্রবণতার শিকার হই। কিন্তু আমরা যদি গভীরভাবে চিন্তা করি, তাহলে দেখতে পাব যে প্রতিশোধের চেয়ে ধৈর্য ও ক্ষমাই আমাদের জন্য বেশি কল্যাণকর।

 

প্রতিশোধের নেতিবাচক প্রভাব,প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবণতা আমাদের মানসিক শান্তি নষ্ট করে। এটি আমাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে এবং আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। অনেক সময় প্রতিশোধের নেশায় আমরা নিজেদেরও ক্ষতির সম্মুখীন করি। তাই প্রতিশোধ নয়, ধৈর্য ও সংযমই আমাদের জীবনের প্রকৃত চালিকা শক্তি হওয়া উচিত।

ইতিহাস বলে, মহান ব্যক্তিরা প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা ও ধৈর্যের পথে হেঁটেছেন। মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের মতো বিশ্বনেতারা অহিংসার মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন করেছেন। তারা প্রতিশোধের চিন্তা না করে ধৈর্য ধরেছিলেন এবং ন্যায়বিচারের ওপর আস্থা রেখেছিলেন।

ধৈর্যের মাধ্যমে সত্যের জয় ,অনেক সময় আমরা মনে করি, অন্যায়ের প্রতিশোধ না নিলে অন্যায়কারী আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। কিন্তু প্রকৃতি এবং সময় নিজস্ব নিয়মে অন্যায়কারীদের পতন ঘটায়। ঠিক যেমন গাছের পচা ফল নিজেই পড়ে যায়, তেমনি সমাজের অন্যায়কারী ব্যক্তিরাও এক সময় তাদের কৃতকর্মের জন্য শাস্তি পায়।

 

আমরা যদি প্রতিশোধের পথে হাঁটি, তাহলে আমাদের মন-মানসিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধৈর্য ধরলে আমরা নিজেদের ইতিবাচক পথে রাখতে পারি এবং মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারি। এজন্যই মহান মনীষীরা ধৈর্যের গুরুত্বকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে স্থান দিয়েছেন।

প্রতিশোধপরায়ণতা শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজকেও অশান্তির দিকে ঠেলে দেয়। অন্যায়ের মোকাবিলা করতে হলে ধৈর্য ও বিচক্ষণতার মাধ্যমে তা করতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি নিজেই তার বিচার করে, আমাদের শুধু ধৈর্য ধরে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকতে হবে।