রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যুগ যুগ ধরে তারাবির রাকাত সংখ্যার দলিল

 

লেখকঃ ইসলামিক স্কলার মাওঃ মুফ্তি এম ফাহাদ হোসাইন (কুমিল্লা)

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম, তাবেয়িন, তাবে তাবেয়িন, আইম্মায়ে মুজতাহিদিন এবং চার মাযহাবের নির্ভরযোগ্য ইমামগণের আমল দ্বারা একথা সুপ্রমাণিত যে, তারাবিহ নামায ২০ রাকাত। সুতরাং ৮ রাকাত তারাবিহ পড়ার মতকে অনুসরণের অর্থ হলো, নবি, সাহাবি, তাবেয়িন ও ইমামগণের অনুসৃত আমলকে প্রত্যাখ্যান করে নব্য সৃষ্ট কোনো মতবাদ অনুসরণ করা।
হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে ২০ রাকাত (তারাবিহ) এবং বিতির পড়তেন।৩. মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৭৬৯২; আল-মুজামুল কাবির, হাদিস। ১২১০২।
হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘রমযান মাসের এক রাতে রাসুল সাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইরে তাশরিফ নিয়ে এলেন। আর সাহাবায়ে কেরামরে ২৪ রাকাত (৪ রাকাত ইশার, আর ২০ রাকাত তারাবিহ) নামায পড়ালেন। আর তিন রাকাত বিতির পড়ালেন।”৪. তারিখে জুরজান, পৃষ্ঠা: ২৭।
হবরত সায়েব বিন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন, ‘আমরা হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলে ২০ রাকাত তারাবিহ ও বিতিব পড়তাম।
সুনানে সুগরা লিল বায়হাকি, হাদিস: ৮৩৩।
হযরত সায়েব বিন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলে লোকেরা ২০ রাকাত তারাবিহ পড়তেন। আর হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহ আনহুর শাসনামলে লম্বা কিরাতের কারণে লাঠির উপর ভর দিতেন।”
বায়হাকি, ৪/২৯৬
হযরত আবুল হাসনা বলেন, ‘হযরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু এক ব্যক্তিকে পাঁচ”তারবিহ”-এর সাথে ২০ রাকাত পড়াতে হুকুম দিয়েছেন।””সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি, হাদিস: ৪৮০৫।
একথা স্বীকৃত যে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত চার মাযহাবের অনুসারী। এই চার ইমামের মাঝে প্রথম ইমাম হলেন ইমাম আবু হানিফা রহ. (মৃত্যু: ১৫০ হিজরি), যিনি ২০ রাকাত তারাবির প্রবক্তা।”
ফাতাওয়ায়ে কাজিখান, ১/১১২।
ইমাম মালিক রহ.-এর একটি বক্তব্য ২০ রাকাতের পক্ষে, দ্বিতীয় বক্তব্য ৩৬ রাকাতের পক্ষে (এর মধ্যে ২০ রাকাত তারাবিহ আর ১৬ রাকাত নফল)।”হিদায়াতুল মুজতাহিদ, ১/১৬৭।ইমাম শাফেয়ি রহ, ২০ রাকাতের প্রবক্তা।”আল-মুগনি, ২/১৬৭।ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ.-এর নির্ভরযোগ্য বক্তব্য হলো, তারাবিহ ২০ রাকাত।’আল-মুগনি, ২/১৬৭।সুতরাং চার মাযহাবের ফিকহি ইবারতের মাঝে কোনো একটি ইবারতেও ৮ রাকাত তারাবিহকে সুন্নত আর ২০ রাকাতকে বিদআত বলা হয়নি।
এ ছাড়া ইবনে কুদামা হাম্বলি রহ. (মৃত্যু: ৫৯৫ হিজরি) আল-মুনগির ২য় খণ্ডের ১৬৭নং পৃষ্ঠায় এবং আল্লামা কাসতাল্লানি শাফেয়ি রহ. (মৃত্যু: ১২৩ হিজরি) ইরশাদুস সারির ৩য় খণ্ডের ৬১৫নং পৃষ্ঠায় ২০ রাকাতের উপর সাহাবায়ে কেরামের ইজমার কথা উল্লেখ করেছেন।

মোল্লা আলি কারি হানাফি রহ. (মৃত্যু: ১০১৪ হিজরি) শরহুন নুকায়ার ২য় খণ্ডের ২৪১নং পৃষ্ঠায় এবং আল্লামা সাইয়েদ মুরতাজা যুবাইদি (মৃত্যু: ১২০৫ হিজরি) ইতহাফুল সাদাতুল মুত্তাকিন কিতাবের ৩য় খণ্ডের ৭০০নং পৃষ্ঠায় সাহাবায়ে কেরামের এই ইজমা তথা ঐকমত্যের কথা বর্ণনা করেছেন।

ইসলামিক স্কলার
মাওঃ মুফ্তি এম ফাহাদ হোসাইন
কুমিল্লা