সৈনিকরা দেশরক্ষার অতন্ত্র প্রহরী প্রবাসীরা দেশ উন্নতির চাবিকাঠি

বিশ্বে বাংলাদেশী প্রবাসী কর্মীর সংখ্যা ১ কোটি ৫৫ লাখ । ছবি- সংগৃহীত

সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমা ও মা বাবার দোয়া বা আশীর্বাদে প্রবাসীরা অনেক বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পায়। বাংলাদেশের সৈনিকরা যেমন দেশরক্ষার অতন্ত্র প্রহরী; ঠিক তেমনি প্রবাসীরাও দেশ উন্নতির চাবিকাঠি । সৈনিকরা যদি অধিকার পায় তাহলে প্রবাসীরা কেন নয। প্রবাসীরা সৈনিকের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। প্রতিটি প্রবাসী এক একটি জীবন যুদ্ধের সৈনিক। কেউ না হেঁসে অন্যের হাঁসি পেতে ভালোবাসে ! আবার কেউ না খেয়ে অন্যকে খাওয়ানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যায় ! আবার কেউ অন্যের সুখের জন্য নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে দেয়।

প্রবাস মানে বিদেশ বা দূরদেশ, প্রবাস মানে আত্মীয়স্বজন বিহীন বছরের পর বছর একাকী কাটিয়ে দেয়া, প্রবাস মানে দেয়ালবিহীন কারাগার, প্রবাস মানে শত দুঃখ কষ্টের সঙ্গে বিরামহীন জীবন যুদ্ধ করা। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় জীবিকার তাগিদে কারো ছেলে, কারো ভাই, কারো বাবা, কারো স্বামী অন্যের সুখের জন্য নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে দেশান্তরী হয়। এই দেশান্তরী হওয়া মানুষগুলোর সুন্দর একটি নাম প্রবাসী। প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা অর্থাৎ রেমিটেন্স বাংলাদেশের আয়ের প্রধান উৎস। বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি মানুষ প্রবাসী। এই এক কোটির সাথে পরিবারের ৫ জন করে সদস্য হিসাব করলে মোট ৬ কোটি মানুষের ভাগ্য জড়িত।

আমি শতকরা ৯০ ভাগ প্রবাসী অর্থাৎ সাধারণ শ্রমিকদের কথা বলছি। প্রবাসীরা মাসিক যে বেতন পায় তার এক- তৃতীয়াংশ নিজের রুম ভাড়া,খাওয়া, মোবাইল ও অন্যান্য খরচে চলে যায়। বাকি দুই- তৃতীয়াংশ পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয় ; তাতে ঘর খরচ, ছেলে- মেয়ের স্কুলের খরচ, ভাই -বোনের বিবাহ, মা -বাবার চিকিৎসা খরচ ও সহধর্মিনীর হাত খরচ ইত্যাদি। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে। কিন্তু অনেকের ভাগ্যে ঠিকমতো বেতন জোটে না, (৪-৫) মাস পর্যন্ত বেতন বাকি থাকে।তখন ধার-কর্জ করে প্রিয়জনের সুখের জন্য টাকা পাঠিয়ে থাকে। কিন্তু সে দুঃখ কাউকে বুঝতে দেয় না। নিরাশার অতল গহবরে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলো চোখের নোনাজল উপেক্ষা করে বুকের কষ্ট বুঝতে না দিয়ে বলে মা আমি ভালো আছি, বাবা আমি ভালো আছি। প্রতিটি টাকা খরচ করতে থাকে দুইবার ভাবতে হয়।

এবার আসি প্রবাসীদের জীবনযাত্রা। কর্ম ভেদে কাজ ভিন্ন হয় যেমন বড় কোম্পানিতে ভোর চারটায় উঠে দুপুরের খাবার নিয়ে (৩০-৪০) কিলোমিটার দূরে বিল্ডিং কন্সট্রাকশন এর কাজে যেতে হয়। দোকানের চাকরি সকাল পাঁচটা- ছয়টা থেকে রাত দশটা- এগারোটা পর্যন্ত। আর সবচেয়ে কষ্টের কাজ হচ্ছে বাগান ও ঘরের চাকরি। যেখানে শুধুমাত্র নিদ্রাটাই বিশ্রাম। একটু বিশ্রাম নেবে তার সুযোগ নেই ; শুধু কাজ করে যাও। শুধু তাই নয়, তার উপর আবার মানসিক নির্যাতনও চলে। বছরে রমজান ঈদ ও কোরবানি ঈদ দুই দিন করে মোট চার দিন বন্ধ পাওয়া যায়। জীবনের সোনালী দিন ও মধুময় যৌবন হাসিমুখে বিসর্জন দেয়। মা-বাবার স্নেহ , ছেলে মেয়ের আদর ,স্ত্রীর ভালোবাসা ,ভাই বোনের মমতা থেকে বঞ্চিত হয়। এমনকি পরিবার ও সমাজের সব অনুষ্ঠান থেকেও বঞ্চিত। বছরের পর বছর যাদের জন্য তাঁরা প্রবাসে; সেই পরিবারও অনেক সময় তাদের ভুল বুঝে, মনে কষ্ট দেয় । তাঁদের সব সময় এটা -ওটা পাঠাতে বলে। পরিবারের অন্য সদস্যদের দ্বারা তাঁরা অবহেলার শিকার হয়। পরিবার ও তাদের দুঃখ বুঝেনা, এ এক নির্মম পরিহাস। এই কষ্ট কাকে বলবে? কে শুনবে? কার জন্য করলাম ? এটা আমার কথা নয়, প্রতিটি প্রবাসীর আত্মকথা। প্রবাসে একা থাকা, নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা খারাপ পরিবেশে কাজ করা ইত্যাদি কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, হূদরোগ, কর্মক্ষেত্রে বা সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি মাসে (১০০-১৫০) জন ফিরে লাশ হয়ে। এখন নিশ্চয়ই দেশের মানুষ আর প্রবাসের মানুষ পার্থক্যটা বুঝতে পেরেছেন।

এখন প্রবাসীদের একটু সুখ দুঃখের কথা বলি। সুখ হচ্ছে মাস শেষে যখন হাতে বেতন আসে এবং তা পরিবারের কাছে পাটায়; তখনই আনন্দ তখনই সুখ। যখন শুনে মা বাবা সহ পরিবারের সবাই ভালো আছে তখন এক মহা আনন্দ। দুঃখ হচ্ছে মাস শেষে টাকা না পাওয়া এবং বাড়িতে কারো অসুস্থতা এবং সবচেয়ে কষ্টের হচ্ছে যখন বিদেশে থাকা অবস্থায় আপন জনের মৃত্যু সংবাদ। তাই প্রবাসী পরিবারের কাছে মিনতি আপনারা প্রবাসীর চাওয়া-পাওয়া কোন সময় বুঝতে চেষ্টা করেননি? প্রবাসীরা পরিবারের কাছে একটু সহানুভূতি ও সুন্দর ব্যবহার কামনা করে তাও আপনারা দিতে ব্যর্থ। দুঃখের সাথে বলছি প্রবাসীদের জন্য নূন্যতম কেউ ভাবে না। তাই প্রবাস মানে নিঃসঙ্গতা, প্রবাস মানে দুঃখ কষ্টের সাথী, প্রবাস মানে নিজে রান্না করে খাওয়া, প্রবাস মানে জুন, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৫ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাজ করে যাওয়া, প্রবাস মানে ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও চোখ বুজে সহ্য করা, প্রবাস মানে দীর্ঘ নিঃশ্বাস।

সবকিছু থেকে বঞ্চিত হওয়া সত্ত্বেও পরিবার সমাজ এবং দেশ থেকে শুধু অবহেলা পেয়েছে। আমি একটু ব্যাখ্যা করি, কষ্টার্জিত টাকা প্রবাসীরা পরিবারকে দিয়ে থাকে সেই টাকা সমাজ ও দেশের জন্য খরচ করেন। তার মানে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে দেশের উন্নতি হয় দেশে কাজ করা আর বিদেশের মাটিতে কাজ করার পার্থক্য অনেক কিছু। নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝেছেন আপনারা। বিমানবন্দরে প্রবাসীদের কামলা বলে অপমান করা এবং মালপত্র নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রবাসীরা কি চাই? বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সুন্দর ব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। প্রবাসী পরিবারকে আইনি সহায়তা, চিকিৎসা, ব্যাংক, শিক্ষা ও সামাজিকতায় অগ্রাধিকার দেওয়া। দুঃখের বিষয় সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছ থেকে ন্যূনতম সেবা পাওয়া যায় না। প্রবাসীদের প্রতি দেশ ও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে।

প্রকাশকঃএম এইচ, কে , উপদেষ্টা সম্পাদক,জাহাঙ্গীর আলম জাবির, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃনির্বাহী সম্পাদকঃ বার্তা সম্পাদকঃ সাইদুর রহমান মিন্টু এএনবি২৪ ডট নেট নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে । তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি anb24.net is one of the most popular Bangla News publishers. It is the fastest-growing Bangla news media that providesective news within the accurate and obj shortest poassible time.anb24.net intends to cover its reach throughout every district of the country, also global news of every segment such as politics, economics, sports, entertainment, education, information and technology, features, lifestyle, and columns anbnewsbd@gmail.com /mahamudulbd7@gmail.com mahamudul@anb24.net