পর্যটনকে কেন্দ্র করে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনন্য নজির গড়েছে দ্বীপদেশ মালদ্বীপ। বর্তমানে বৈদেশিক আয়ের ৭০ শতাংশ এই খাত থেকেই আসে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পর্যটনে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসে দেশটিতে।
প্রতিবছর মালদ্বীপ সফরে যান জনসংখ্যার অন্তত তিনগুণ পর্যটক। আরবের ধনকুবের বা বলিউডের সুপারস্টার, সবারই আয়েসি অবসর যাপনের অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠেছে ছোট্ট এই দ্বীপ। আর পর্যটনকে কেন্দ্র করে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া মালদ্বীপ ছুটছে আরও উন্নতির পথে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিজনিত হুমকি মোকাবিলা করে গড়ছে নতুন নতুন দ্বীপ। অন্য দেশ থেকে পলি এনে উন্নত করছে ভূমি। ঘটাচ্ছে পর্যটন অবকাঠামোর উন্নয়ন। মালদ্বীপ তাই পর্যটন খাতে আরও অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের কাছেও অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন সাজেকের পাঁচ ভাগের এক ভাগও নয় মালদ্বীপের আয়তন। অঙ্কের বিচারে তিনশ বর্গকিলোমিটার মাত্র। কিন্তু ভারত মহাসাগরের ছোট্ট এই দ্বীপ দেশই এখন পৃথিবীর অন্যতম ব্যয়বহুল পর্যটন গন্তব্য। দেশটিতে পর্যটক সমাগমের ব্যাপকতা বোঝাতে বাংলাদেশে নিযুক্ত হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামির বললেন, ‘প্রতিবছর আমাদের দেশে প্রায় দেড় মিলিয়ন পর্যটক আসেন, যা আমাদের জনসংখ্যার (পাঁচ লাখ) তিনগুণ বেশি। এর মধ্যে চার হাজার বাংলাদেশি পর্যটক রয়েছেন।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেছেন, ‘আন্তঃদ্বীপ সংযোগ, গ্রিন ট্যুরিজম, জলবায়ু উপযোগী অবকাঠামো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে মালদ্বীপের অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিশ্চিত হয়েছে। মালদ্বীপের সঙ্গে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করলে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। পর্যটনসহ অন্যান্য উত্তম কার্যক্রমের মডেল ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা প্রয়োজন।’
গত ৩ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকাস্থ মালদ্বীপ হাইকমিশনে মালদ্বীপের পর্যটন শিল্পের ৫০ বছর পূর্তিতে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রদর্শনীতে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ঢাকাস্থ মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামির ডিএনসিসির প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান।
ডিএনসিসির সিইও মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘ভারত মহাসাগরের বুকে প্রায় ১২০০ দ্বীপ নিয়ে মালার মতো ছড়িয়ে থাকা দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। রৌদ্রোজ্জ্বল দিন, নীলাভ-সবুজ জলরাশি, সাদা বালুকাময় সমুদ্র সৈকত ও উন্নত সেবার কারণে মালদ্বীপ সারা বিশ্বের মানুষের কাছে আর্কষণীয় স্থান হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। পর্যটন খাত নিয়ে মালদ্বীপের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আছে।’
ডিএনসিসির কর্মকর্তারা চিত্রাঙ্কন প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন এবং সিইও মালদ্বীপ হাইকমিশনে রক্ষিত বইয়ে মন্তব্য লিখেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন—ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ আমিরুল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, মেয়রের একান্ত সচিব শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন।