দেশের রাজনীতি, সমাজ নানা কারণে তীক্ষ্ণভাবে বিভক্ত এমন দাবি করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা ও বাস্তবতা সম্পর্কে জানতে চাই।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে একথা বলেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে পরামর্শ শোনার উদ্যোগ নেয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের পাশাপাশি সাবেক আমলা, সিনিয়র সাংবাদিকসহ ২৮ জনকে এজন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে সংস্থাটি।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অতিথিদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, আমরা আপনাদের যাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি তারা রাজনীতিতে যুক্ত নন। আপনারা ইনটেলিকুচুয়াল। সে কারণে নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা ও আপনাদের অভিজ্ঞতা, মতামত পেয়ে আমরা ঋদ্ধ হতে চাই। আপনারা একাডেমিক আলোচনা করলে আমাদের জন্য বুঝতে সুবিধা হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের দেশে মাস্তান ও পেশিশক্তি আছে। ফলে প্রিসাইডিং অফিসার অসহায় হয়ে পড়ে। আমরা নির্বাচন বাতিল করতে পারবো। যার জন্য ভোট বাতিল হবে সে আর নির্বাচন করতে পারবেন না
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রত্যাশা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক বৈঠকে ৮ জন আলোচক ও ২০ জন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য কমিশন কাজ করছে। এই নির্বাচন নিয়ে দেশের সম্মানিত ভোটার, সাধারণ নাগরিক, গণমাধ্যমকর্মী, বিদেশে থাকা ভোটার ও প্রবাসীদের আগ্রহ আছে। এছাড়াও দাতা সংস্থা, বন্ধু প্রতীম দেশগুলোর ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। তাই জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন কিভাবে করা যায় সে বিষয়ে আপনাদের কাছ থেকে পরামর্শ শুনতেই আজকের আয়োজন।
আমন্ত্রিত আলোচকদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. হুমায়ূন কবীর, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
অতিথিরা হচ্ছেন— জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, খবর সংযোগ সম্পাদক শেখ নজরুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ, ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিষ সৈকত, সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল, সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত, সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জুবায়ের, আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান, মাছরাঙা টেলিভিশনের হেড অব নিউজ রেজোয়ানুল হক রাজা, আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার, প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক সারফুদ্দিন আহমেদ, গাজী টিভির হেড অব নিউজ ইকবাল করিম নিশান, এখন টিভির সম্পাদকীয় প্রধান তুষার আব্দুল্লাহ, দৈনিক আমার সংবাদ সম্পাদক মো. হাশেম রেজা, দ্য ডেইলি অবজারভারের অনলাইন ইনচার্জ কাজী আব্দুল হান্নান, যুগান্তরের সিনিয়র সাংবাদিক ও কলাম লেখক মাহবুব কামাল, মাইটিভির হেড অব নিউজ শেখ নাজমুল হক সৈকত, বিবি আছিয়া ফা
উন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক (সিইও) মো. মনির হোসেন এবং মোহনা টিভির নিউজ এডিটর (ভারপ্রাপ্ত সিএনই) আব্দুর রউফ।
বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।
আগামী নভেম্বরে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে চায় নির্বাচন কমিশন। চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ কিংবা আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভোট সারতে চায় কমিশন।