পদত্যাগ করলেও নতুন কেউ দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত স্পিকার হিসেবে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে গণমাধ্যম কে জানান।
আইনজীবী আহসানুল করিম আরও বলেন, তবে ফৌজদারি অপরাধে শিরিন শারমীনকে গ্রেপ্তারে আইনি কোনো ধরনের বাধা নেই। এ ক্ষেত্রে তাকে গ্রেপ্তার করা যায়।এর আগে পদত্যাগ করেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন। পরে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) স্পিকারের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৭৪ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতির কাছে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্পিকার পদ হতে পদত্যাগ করেছেন এবং তার পদত্যাগপত্রটি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ১৮ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ/২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে গৃহীত হয়েছে এবং উক্ত তারিখে কার্যকর হয়েছে।
আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এরপর রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। পরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে স্পিকার নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। পরে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল স্পিকার নির্বাচিত হন শিরীন শারমিন চৌধুরী। এর পর থেকে তিনিই এ দায়িত্বে টানা রয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর বিরুদ্ধেও রংপুরে হত্যা মামলা হয়েছে। এ ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক (টুকু) ১৫ আগস্ট গ্রেপ্তার হয়ে হত্যা মামলায় রিমান্ডে রয়েছেন।
স্বাভাবিক সময়ে স্পিকারের পদত্যাগের ঘটনা এক রকম হবে; কিন্তু আন্দোলনে সরকার পতনের পর স্পিকারের পদত্যাগ অনেককে কৌতূহলী করে তুলেছে।শিরীন শারমিনের পদত্যাগের প্রসঙ্গ ধরে শাহদীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, “এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, স্পিকার পদত্যাগ করেছেন, ডেপুটি স্পিকার বন্দি, তাতে সংবিধান মেনে চলা হলে দেখা যায়, এতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।”
আবার সংবিধানে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই সময়ে নির্বাচন করতে না পারলে তা সাংবিধানিক সংকট তৈরি করবে বলে এরই মধ্যে সতর্ক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তবে ড.মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের বিষয়ে যে এখনই ভাবছে না, তা স্পষ্ট। তারা সংবিধান সংস্কারের পক্ষে মনোযোগ দিচ্ছে।
দুদিন আগেই বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ড. ইউনূসের সংলাপের পর তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কার’ করতে চায় এই সরকার। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার কীভাবে হবে, বিচারের প্রক্রিয়া কী হবে, সংবিধান কি সংস্কার করব, না কি পুনরায় লেখা হবে– সেটা নিয়ে বারবার আলোচনা হয়েছে।”