গত সাত অক্টোবর হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে খাবার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রবেশে অবরোধ দিয়েছিল ইসরায়েলি সরকার।জাতিসংঘ। এক বিবৃতিতে বলা হয়, গাজার হাসপাতালগুলোতে ইনকিউবেটরে চিকিৎসাধীন কমপক্ষে ১২০ জন নবজাতক ঝুঁকিতে রয়েছে, যাদের মধ্যে ৭০ জন যান্ত্রিক ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। ইনকিউবেটরে না রাখলে শিশুরা মারা যেতে পারে।
গাজার হাসপাতালগুলো মজুত করা জ্বালানি দিয়ে দুই সপ্তাহের মত চললেও ফুরিয়ে এসেছে জ্বালানি। আর তাই জ্বালানির অভাবে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হাসপাতালগুলো।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা বিবিসি জানায় যে, প্রয়োজনীয় জ্বালানির সংকটে গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলি জরুরি বিভাগ বাদে বাকি সব বিভাগ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
বিবিসি রেডিও ফোর-এর টুডে প্রোগ্রামকে বিবিসির সাংবাদিক রুশদি আবুলউফ বলেন, “জ্বালানি খরচ কমাতে হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগগুলি বন্ধ করা হয়েছে। যাতে করে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়।”
তিনি আরও বলেন, “তারা কেবল জীবন বাঁচানোর মিশনে মনোনিবেশ করছে। অর্থাৎ শুধুমাত্র মানুষের জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হবে। গুরুত্বর অপারেশন ও কিডনি ডায়ালাইসিসের মত চিকিৎসা দেয়া হবে কেবল।
এটি একটি অত্যন্ত বিপর্যয়কর পরিস্থিতি বলে অভিহিত করেন বিবিসির সাংবাদিক।
নরওয়েজিয়ান এইড কমিটির ম্যাডস গিলবার্ট মিশর থেকে বিবিসিকে জানান গাজাতে তার সহকর্মীরা “ভয়াবহ পরিস্থিতির” মোকাবিলা করছেন।
ইসরায়েলি বোমা হামলার ফলে অনেক লোক গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি গর্ভবতী মহিলাদের অকাল প্রসবের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
গাজার হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন ডায়ালিসিস সেবা নেন প্রায় ১ হাজার রোগী। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালেরি নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রয়েছে অন্তত ১৩০ জন অপরিপক্ক (প্রিম্যাচিউর) শিশু। সেই সঙ্গে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন এমন বহু রোগী রয়েছেন, যাদের জীবন রক্ষার জন্য হাসপাতালে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ জরুরি।
ডব্লিউএইচওর পাশাপাশি শিশু অধিকার ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনিসেফ ও গাজা উপত্যকায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দিতে জোর দিয়েছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, “হাসপাতাল, ডিস্যালিনেশন প্লান্ট এবং ওয়াটার পাম্পিং স্টেশনের মতো প্রয়োজনীয় মৌলিক সুবিধার জন্য জ্বালানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।“