কুমিল্লা প্রতিনিধি ।
এম এ জাহের উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেনকে ৪ হাজার ২৮৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আলহাজ্ব এম এ জাহের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক । নবনির্বাচিত সাংসদ এম এ জাহের শিক্ষা জীবন শেষ করে বড় ভাই মরহুম আবু তাহের এর সাথে ব্যবসা শুরু করেন। তার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সততা ও নিষ্ঠার সাথে ধীরে ধীরে একজন উদ্যোক্তা, ঠিকাদার ও সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠেন। পাশাপাশি তিনি সীমান্তে শিক্ষার আলো জ্বালাতে নিজ গ্রামে বড় ভাই এর নামে গড়ে তোলেন ‘শশীদল আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহের কলেজ’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যা কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সেরা দশটির একটি।
এখানেই থেমে নেই এম এ জাহের, গতবছর নিজ উপজেলার উত্তরাঞ্চল এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে ‘মাধবপুর আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু জাহের ফাউন্ডেশন কলেজ’ নামে আরেকটি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন তিনি। যা এ বছর একাদশ শ্রেণি থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া নিজ এলাকায় ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন শিক্ষানুরাগী এম এ জাহের। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, (দুইবারের) সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীকে নৌকা প্রতীকে পরাজিত করে এম এ জাহেরের বড় ভাই আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু তাহের বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু বরন করলে শূন্য পদটিতে উপ-নির্বাচনে আবারও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীকে পরাজিত করে মরহুম আবু তাহের এর ছোট ভাই এম এ জাহের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু জাহের কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের মল্লিকাদীঘি গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবদুস ছোবহান ও মৃত মোমেনা খাতুনের ছেলে। পরিবারে তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আবু জাহের কুমিল্লা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। পরে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। সেই মনোনয়ন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হলে তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থীতা ফিরে পান। পরে আবু জাহের কুমিল্লা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেটলি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ফলাফলে দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ জাহের কেটলি প্রতীকে ৬৫ হাজার ৮১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বুড়িচং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন ফুলকপি প্রতীকে পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫২২ ভোট। ৪ হাজার ২৮৮ ভোটের ব্যবধানে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নবনির্বাচিত সাংসদ আলহাজ এম এ জাহের তার এ বিজয় কে বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়াবাসির বিজয় বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত ভিশন ৪১ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের অংশ হিসেবে বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়ায় উন্নয়নের ধরা অব্যাহত রাখতে যারা মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ এবং মহান আল্লাহ তায়ালার শোকরিয়া আদায় করছি।। আমি দুই উপজেলাবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। কুমিল্লা-৫ বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়াকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে ও জনগণের চাওয়া পাওয়া পূরণ সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন ।