ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভার বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন বলেন, ৭ নভেম্বর জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন। কিন্তু গত সরকার এই ৭ নভেম্বর পারলে ক্যালেন্ডার কেটে দেয়ার চেষ্টায় ছিল।
এই ছিল তাদের মানসিক অবস্থা। তারা জানে এই ৭ নভেম্বরের বিপ্লব ও সংহতি দিবসের সত্যিকারের ইতিহাস যদি মানুষের সামনে উঠে আসে তাহলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। যার কারণে তারা ৭ নভেম্বর নিয়ে আলোচনা করতে রাজি ছিল না। শুধু তাই নয় এই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর-এরপর ৫ এর পাতায়
রহমান এবং আরো যাদেরকে নিয়ে এই স্বাধীনতা যুদ্ধে কঠিন ভূমিকা রেখেছিল, অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছিল সেই লোকগুলোর নামও তারা মুছে ফেলে দিয়ে একমাত্র তারা তৈরি করতে চেয়ে ছিল স্বাধীনতার চেতনা। যদি এদের কাউকে প্রশ্ন করেন ভাই স্বাধীনতাতো বুঝলাম কিন্তু চেতনাটা কি? এর উত্তরে একটা কাশ দিতো আর পাশ কেটে চলে যেতো সত্যিকার কোন জবাব ছিল না তাদের কাছে।
এটা একটা যাস্ট স্লোগান তৈরি করেছিল। একিই ভাবে স্কুল কলেজে পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস শিশুদের ভিতরে শিশুদের মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছিল। কিন্তু দু:খ জনক হলেও সত্য যে এই স্বাধীনতার ঘোষক তাঁর নামটা পর্যন্ত তারা কোথাও রাখতে রাজি ছিলনা। তারা মানুষকে এমন সব ঘটনা বলতো মানুষের ইচ্ছে করতো পায়ের জোতা দিয়ে গালের মধ্যে পেটাতে। রক্ত টগবগ করতো। তিনি আরো বলেন, উচ্চ মানের মানুষকে আল্লাহ পাঠায় পৃথিবীর কল্যাণে, দেশের কল্যাণে, সমাজের কল্যাণে ও মানুষের কল্যাণে। এদের কিন্তু অসংখ্য জন্ম হয়না, এদেরকে বলা হয় ক্ষণজন্মা মানুষ।
তেমনি একজন লোক ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এই লোকটা জাতিকে বহুবার রক্ষা করেছে। স্বাধীনতার যুদ্ধের ঘোষণা, অনেকের হয়তো জন্মও তখন হয় নাই। বক্তব্য দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব ব্যাগ গুছিয়ে বসে আছে কখন আসবে আর ওনাকে নিয়ে যাবে। জাতি যখন দিশেহারা কোন দিকে যাবে । শত শত ইপিআর পুলিশ আর্মিদের সাথে যুদ্ধ হবে। যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে কোন নির্দেশনা নাই। জাতি দিশে হারা কোথায় যাব আমরা কি করবো। শেখ মুজিব সাহেব অনেক কথা বলেছে কিন্তু স্বাধীনতার কথা বলেনাই। কোথাও বলেনাই স্বাধীনতার কথা। সেদিন রাতে সবাই যখন দিশেহারা সেনাক্যাম্প থেকে কিছু আর্মি যখন পালিয়েছে, পুলিশরা অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে আসছে তারাও কিছু বুঝতে পারছিলনা কি হচ্ছে, আমরা কি করতে যাচ্ছি । এই সেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। আমার নিজের কানে শুনা, রেডিওতে শুনা। আমি মেজর জিয়া বলছি। বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা করলো। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি স্ব ইচ্ছায় ক্ষমতা নেয় নাই। উনি কিন্তু ক্ষমতা নিতে চায় নাই। উনাকে সিপাহী জনতা জোর করে ক্ষমতায় বসতে বাধ্য করেছে অনুরোধ করেছে ক্ষমতায় বসতে এবং জাতির প্রয়োজনে উনি সেই দিন ক্ষমতায় বসেছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতার লোভী মানুষ ছিলনা। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মানুষ ছিলনা, ক্ষমতা দিয়ে অর্থ লোপাট করার মানুষ ছিলনা। তার জ¦লন্ত প্রমাণ উনার মৃত্যুর পরেও উনার শত্রু যারা তারাও বলতে হয়েছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট আমার নেতা, আমাদের নেতা সবার নেতা বাংলাদেশের সত্যিকারের নেতা। গতকাল ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন এসব কথা বলেন। কুমিল্লায় ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নগরীর টাউন হল মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে দক্ষিন জেলা ও মহানগর বিএনপি। কুমিল্লা দক্ষিন জেলা বিএনপির আহবায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রিয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রিয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, মহানগর বিএনপির আহবায়ক উৎবাতুল বারী আবু, দক্ষিন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসূফ মোল্লা টিপুর পরিচালনায় সভায় আলোচক ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল ইসলাম দুলাল, বিএমএ, কুমিল্লার সাবেক সভাপতি ডা. ইকবাল আনোয়ার।
এসময় কুমিল্লা মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক আমিরুজ্জামান আমীর, সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শওকত আলী বকুল, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক মোস্তফা জামান, আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, মহানগর বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি আনোয়ারুল হক, সদস্য সচিব ফরিদ উদ্দিন শিবলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নজরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাদিমুর রহমান শিশিরসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে সমাদৃত জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার নানা চেষ্টা হয়েছে। আওয়ামী শাসনামলে দিবসটি স্বাচ্ছন্দ্যে উদযাপন করতে পারেনি। ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী শক্তিকে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।