প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের বিপদ এড়াতে উপকূলীয় ১০ জেলার ঝূঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি শেষে এ কথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ১০ জেলার ১৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হবে।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড়ের গতি-প্রকৃতি এবং অবস্থান তুলে ধরেন এনামুর রহমার। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “৭ নম্বর বিপদ সংকেত দিলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া আছে। সে অনুযায়ী এই মুহূর্ত থেকে আমাদের মাঠ প্রশাসনের এবং স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্গত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া শুরু করবে।
“ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ, গতিবেগ ও চরিত্র বিশ্লেষণ করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি- মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে সকাল ১০টার মধ্যে এটি উপকূলীয় অঞ্চল অতিক্রম করবে। সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে যেন আশ্রয়কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের নিয়ে যাওয়া হয়।”
ছুটি বাতিল
ঘূর্ণিঝড় হামুনের কারণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন উপকূলীয় ১০টি জেলার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মঙ্গলবারের সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, উপকূলীয় অঞ্চলের মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও মাঠপর্যায়ের কর্মাকর্তারা কাজ করছেন। গত বছরের সিত্রাং ঘূর্ণিঝড় থেকে হামুনের গতিপথ একই ধরনের, যদিও একটু উত্তরপশ্চিমের দিকে আছে। কিন্তু গতিপথ ও গতি অনেক একই রকম। যে কারণে একটু অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আরও ঘনিভূত হয়ে পরিণত হয়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে এ ঘূর্ণিবায়ুর চক্র পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ উপকূলের ৩১০ কিলোমিটারের মধ্যে।
ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি বাড়ায় সংকেতও বাড়িয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। স্থানীয় হুঁশিয়ার সংকেত নামিয়ে পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্ররকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলায় উপকূলীয় অঞ্চলে দুটি পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মাঠপ্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীরা সেখানে কাজ করছেন। সেখানে রান্না করা খাবার ও সুপেয় পানি, শিশুদের খাবার ও গো-খাদ্য দেওয়ার জন্য আমরা এরই মধ্যে অর্থ বরাদ্দ করেছি। প্রতি জেলায় ২০ লাখ টাকা, ৫০ মেট্রিক টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।”