ভৈরব বাজার রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ঢাকাগামী এগারসিন্দুর ট্রেনকে একটি মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় যাত্রীবাহী ট্রেনের দুটি বগি উল্টে গেছে। আজ সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ১৮টি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। রাত ১১টা পর্যন্ত ১৫ জনের মরদেহ শনাক্ত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, অনেকে এখনও উল্টে পড়া ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে আছে। এদিকে, দুর্ঘটনার পর থেকে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে বন্ধ আছে ট্রেন চলাচল।
বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দুর্ঘটনা এলাকা ঘিরে রেখেছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, আজ বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ভৈরব বাজার রেলওয়ে স্টেশনে এই দুর্ঘটনা হয়। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী এগারসিন্ধুর নামে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে যাত্রীবাহী ট্রেনের দুটি বগি উল্টে যায়। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট উদ্ধার কাজ অব্যাহত রেখেছে। হতাহতের সংখ্যা শতাধিক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেলে ভৈরব থেকে ছেড়ে যায় ঢাকাগামী আন্তনগর এগারো সিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি। ট্রেনটি স্টেশনের আউটার সিগন্যাল পার হওয়ার আগেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি মালবাহী ট্রেন ভৈরব স্টেশনে ঢোকার সময় এগার সিন্ধুর ট্রেনটিকে পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে দুটি বগি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে লাইল থেকে ছিটকে পড়ে। এই সময় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেন।
ট্রেনটির যাত্রী রাহাত মিয়া ও লিটন হোসেন জানান, তাঁরা পেছন দিক থেকে ৪ নম্বর বগিতে ছিলেন। আচমকা ট্রেনটিতে বিকট শব্দ হয়। বড় ঝাকুনি লাগে। পরে ট্রেনটি কিছু দূরে গিয়ে থেমে গেলে তারা ট্রেন থেকে নেমে এক ভয়াবহ দৃশ্য দেখতে পান। তারা দেখেন, রেল লাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আহত-নিহতরা।
দক্ষিণ জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, তিনি রেল লাইনের অনতিদূরেই ছিলেন। দুর্ঘটনা দেখে তিনি অন্যদের নিয়ে ছুটে আসেন এবং উদ্ধারকাজ শুরু করেন। তারা ট্রেনটির গার্ডকে (পরিচালক) আহতাবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
দুর্ঘটনার কারণ জানার চেষ্টা করলেও স্টেশন মাস্টার মো. ইউসুফকে পাওয়া যায়নি।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানিয়েছেন, মরদেহগুলো তাদের কাছে আছে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। কিছু রোগী সেখানে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে রাত সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি নিহতদের দাফন-কাফনের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান এবং আহতদের যথাযথ সুচিকিৎসার নির্দেশনা দেন।