সাধারণ মানুষকে হুমকির মধ্যে রেখে শুধুমাত্র চুরি করতে পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কালাকচুয়ায় রোডমার্চ পূর্ব সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরা (সরকার) বলে অনেক উন্নয়ন করিছি। তারা উড়াল সেতু বানিয়েছে, টানেল বানিয়েছে। পাবনার রূপপুরে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ইউরিনিয়াম নিয়ে আসা হয়েছে। ভয়ংকর এই কেমিকেলের যদি বিস্ফোরণ ঘটে, তাহলে মাইলের পর মাইল ধ্বংস হয়ে যাবে। বছরের পর বছর, প্রজন্মের পর প্রজন্ম মানুষ সেখানে ভুগতে থাকবে।’
জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাগিতে এখনো মানুষ ভুগছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চেরনোবিলে (তৎকালীন সভিয়েত ইউনিয়ন, বর্তমান ইউক্রেন) বিস্ফোরণে সেখানে মাইলের পর মাইল ধ্বংস হয়েছে, অসংখ্য মানুষ মারা গেছে। কোনো রকম ব্যবস্থা-ট্যাবস্থা (নিরাপত্তা) না করে এই সরকার শুধুমাত্র চুরি করার জন্য এ ধরনের প্রকল্প নিয়েছে, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে তাদের হুমকির মধ্যে রাখছে।’
পদত্যাগ না করলে রাজপথেই সরকারের পতনের ফয়সালা হবে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই রোডমার্চের মধ্য দিয়ে আমরা সরকারকে সাফ জানিয়ে দিচ্ছি, এখনো সময় আছে পদত্যাগ করেন, সংসদ বিলুপ্ত করে দেন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। অন্যথায় জনগণ জানে কী করে স্বৈরাচার বিনা ভোটের ক্ষমতা দখলকারী সরকারকে সরাতে হয়। সেজন্য জনগণ আজকে রাস্তায় নেমেছে।’
ফয়সালা হবে কোথায়?’ স্লোগান তোলেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা সমস্বরে স্লোগান তোলেন ‘রাস্তায়, রাজপথে’। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজপথ দখল করে রাখতে হবে। শান্তিপূর্ণভাবে দখলে রাখতে হবে বুঝেছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভবিষ্যতে যদি বাঁচতে চান, দেশকে যদি রক্ষা করতে চান, দেশকে যদি মুক্ত করতে চান আমাদের কোনো বিকল্প নাই, এই জগদ্দলকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। আর কাল বিলম্ব নয়, আমাদেরকে জেগে উঠতে হবে, মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে এবং রাজপথ দখল করতে হবে। আসুন সরকার পতনের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।’
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্দলীয নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির এক দফার দাবিতে যুগপত আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কুমিল্লার কালা খন্দকার ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে এই রোডমার্চ শুরু হয়। রোডমার্চটি ফেনী হয়ে চট্টগ্রামে গিয়ে শেষ হবে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর সিলেট বিভাগ থেকে বিএনপি রোডমার্চ শুরু করে। এরপর ২৩ মার্চ বরিশাল বিভাগ, ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগ, ২৯ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ বিভাগ ও ৩ অক্টোবর ফরিদুর বিভাগে রোডমার্চ করে। কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চের মধ্য দিয়ে ছয়টি রোডমার্চের কর্মসূচি শেষ করতে যাচ্ছে বিএনপি।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আমিনুর রশিদ ইয়াসিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।