পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের বিচারিক রিমান্ডের মেয়াদ আরও ১৪ দিন বাড়ানো হয়েছে। অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে হওয়া মামলায় (সাইফার মামলা) সম্প্রতি গঠিত বিশেষ আদালত বুধবার ইমরানকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। খবর দ্য ডন ও জিও নিউজের।
ইসলামাবাদের জেলা বিচারিক আদালত গত ৫ আগস্ট তোশাখানা মামলায় ইমরানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর থেকে অ্যাটোক কারাগারেই আছেন তিনি। গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (এএইচসি) এই সাজা স্থগিত করেন। কিন্তু অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে রিমান্ডে থাকায় তিনি কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে ইমরানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) যে অভিযোগ দায়ের করেছে, তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের পাঠানো একটি গোপনীয় বার্তার বিষয়বস্তু তিনি জনসমক্ষে ফাঁস করে দিয়েছেন। এ ছাড়া এটিকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ব্যবহার করেছেন।
সাইফার মামলা একটি কূটনৈতিক বার্তা সম্পর্কিত, যা ইমরানের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে বলে জানা যায়। পিটিআই অভিযোগ করে বলেছে, হারিয়ে যাওয়া এই বার্তাটিতে যুক্তরাষ্ট্র ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। এই মামলায় পিটিআইর ভাইস চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকেও গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার পর ২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান ইমরান। এরপর তিনি তার সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশ করার চেষ্টা করায় তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়। যদিও ক্ষমতায় থাকাকালে কোনো অন্যায় করেননি বলে দাবি ইমরানের। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সবই রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত বলে অভিযোগ তার।
ইমরানের সমর্থকদের বিশ্বাস, পাকিস্তানের রাজনীতির ওপর সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণমূলক প্রভাব নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস দেখানোর জন্যই তাদের নেতাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তাকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে আদালতকে ব্যবহার করা হচ্ছে। চলতি বছরের নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, তা আগামী বছরের প্রথম দিক পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তোশাখানা মামলায় পাওয়া সাজা স্থগিত হলেও রায় বাতিল হয়নি—এমনটা দাবি করে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন জানায়, ইমরানের বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা তুলে নেওয়ার কোনো কারণ তারা দেখছেন না।