ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতিদানকারী ১৬০ জন নোবেলবিজয়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের লবিস্ট বলে আখ্যায়িত করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভুঞা।
আজ মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তাসহ মোট ৫০ জন কৃষিবিদ ড. ইউনূসের ওপর চলমান মামলা স্থগিতের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেন। বিবৃতির ব্যাপারে বক্তব্য দানকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৮ আগস্ট ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সদস্য বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রদত্ত এক খোলা চিঠিতে বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন-যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এটি সার্বভৌম একটি দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ। দেশের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে আমরা বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
বিবৃতিদাতারা বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন। আমরা মনে করি, এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে বিবৃতিদাতাগণ অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করছেন। এ ধরনের বিবৃতি বা খোলা চিঠি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলির সম্পূর্ণ পরিপন্থি। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, এ ধরনের বিবৃতি ও চিঠি প্রদান করে বিবৃতিদাতা সম্মানিত ও নোবেল বিজয়ীগণ প্রকৃতপক্ষে ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থি কাজকেই উৎসাহিত করতে চেয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভুঞা বলেন, পৃথিবীর এত দেশের এত এত নোবেলজয়ী এবং ক্ষমতাধর রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সবাই একসঙ্গে ড. ইউনূসের মামলার ব্যাপারে জেনে প্রতিবাদ জানানোটা মোটেও স্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। অবশ্যই তারা লবিস্ট এবং কোনোভাবে মোটিভেটেড হয়ে এই কাজ করেছে। তা ছাড়া তারা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছে যা তারা কোনোভাবেই করতে পারে না। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা হওয়াটা একটা স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়া। তিনি যদি অপরাধী হন তার শাস্তি হবে, আর নিরপরাধী হলে তাকে কোর্ট নিরপরাধী হিসেবে ঘোষণা দিবে। সে যদি নিরপরাধীই হয় তাহলে তাকে নিয়ে বিশ্বক্ষমতাধরদের এত ভয় কীসের?
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- কে আই বি সিলেট জেলা শাখার সভাপতি কৃষিবিদ মো. সাজিদুল ইসলাম, কে আই বি সিলেট জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ড. সালাহ উদ্দিন আহমদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মনিরুল ইসলাম, রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ভূঁইয়া, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শাহ আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাদ উদ্দিন মাহফুজ, সহঅধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ডু, অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা সামছুজ্জামান, অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু জাফর বেপারী, অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. মোশারফ হোসেন সরকার, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ দেবনাথ, অধ্যাপক ড. ফখরুল ইসলাম মুন্সী, অধ্যাপক ড. এম.এম. মাহবুব আলম, অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন, কৃষিবিদ মো. আব্দুল আউয়াল, কৃষিবিদ মোহাম্মদ ছায়াদ মিয়া, কৃষিবিদ ডা. সুজন চন্দ্র সরকার, কৃষিবিদ ডা. সন্তোষ রঞ্জন পাল, কৃষিবিদ দেবাশীষ সাহা, কৃষিবিদ ড. মো. ইকবাল হোসেন, ড. পার্থ প্রতীম বর্মণ, ড. রানা রায়, ড. রাকিবুল হাসান, কৃষিবিদ খলিলুর রহমান ফয়সাল, ড. অশোক বিশ্বাস, কৃষিবিদ ডা. আফরাদুল ইসলাম, কৃষিবিদ ডা. শিপলু রায়, অধ্যাপক ড. পীযুশ কান্তি সরকার, অধ্যাপক ড. নির্মল কান্তি রায়, অধ্যাপক ড. জীতেন্দ্রনাথ অধিকারী, অধ্যাপক ড. মীর মো. ইকবাল হাসান, অধ্যাপক ড. সুমন পাল, অধ্যাপক ড. নাজিম উদ্দিন, অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান, ড. তিলক চন্দ্র নাথ, অধ্যাপক ড. চন্দ্র কান্ত দাশ, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এনামুল কবীর, ড. অসীম শিকদার, ড. শামীমা নাসরিন, কৃষিবিদ কিশোর কুমার সরকার, ড. সাইফুল ইসলাম, প্রফেসর ড. আখতারুজ্জামান জুলহাস, ডা. নাবিলা ইলিয়াস, কৃষিবিদ সুমিত সরকার, ডা. ঋত্বিক দেব অপু প্রমুখ।
কালবেলা