মালদ্বীপের পর্যটন শিল্পের জনক এমইউ মানিক আর নেই- মালদ্বীপজুড়ে শোক

পর্যটনের স্বপ্নদ্রষ্টা মোহাম্মদ উমর মানিক আর নেই: মালদ্বীপে শোকের ছায়া। ১৯৭২ সালে মালদ্বীপের প্রথম রিসোর্ট ‘কুরুম্বা মালদ্বীপ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেশের পর্যটনশিল্পের সোনালি যাত্রা। পর্যটন খাতে অসামান্য অবদানের জন্য পেয়েছেন “দ্য ম্যান হু বিল্ট প্যারাডাইস” উপাধি। পর্যটন ছাড়াও স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সুনামি-পরবর্তী সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপগুলোতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন তিনি। রাষ্ট্রপতি মুইজ্জু ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সোলিহসহ বিভিন্ন মহলের শোকবার্তা। মৃত্যুর আগ পযন্ত দীর্ঘদিন মালদ্বীপ অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রির (MATI) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন। এমইউ মানিক মৃত্যুকালে স্ত্রী, দুই সন্তান ও নাতি-নাতনিদের রেখে গেছেন। তিন দশক ধরে মালদ্বীপের অর্থনীতির প্রধান খাত পর্যটনশিল্প গড়ে তোলার কারিগর তিনি। দেশি-বিদেশি পর্যটন উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বেই মালদ্বীপ বিশ্বমানের পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়।

‘দ্য ম্যান হু বিল্ট প্যারাডাইস’ এমইউ মানিকের মৃত্যুতে  মালদ্বীপজুড়ে শোক।
মোহাম্মদ মাহামুদুল মালদ্বীপ প্রতিনিধি। 
মালদ্বীপের পর্যটন শিল্পের পথিকৃৎ ও ইউনিভার্সাল এন্টারপ্রাইজেসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উমর ‘এমইউ’ মানিক আর নেই। শনিবার ভোরে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
১৯৭২ সালে মালদ্বীপের প্রথম রিসোর্ট ‘কুরুম্বা মালদ্বীপ’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের পর্যটন শিল্পের ভিত্তি স্থাপন করেন এমইউ মানিক। তাঁর দূরদর্শিতা ও অক্লান্ত প্রচেষ্টার জন্য তিনি “দ্য ম্যান হু বিল্ট প্যারাডাইস” উপাধি অর্জন করেন। বর্তমানে পর্যটনই মালদ্বীপের প্রধান অর্থনৈতিক খাত।
তাঁর মৃত্যুতে মালদ্বীপজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাষ্ট্রপতি ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকবার্তায় লিখেছেন, “মালদ্বীপকে বিশ্বমানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে এমইউ মানিকের অবদান অবিস্মরণীয়।”
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহও তাঁর সামাজিক উন্নয়নমূলক অবদানের প্রশংসা করেছেন।
মালদ্বীপের ইসলামিক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ শাহিম জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে মানিক হুলহুমালে’তে একটি মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন এবং জমি বরাদ্দও দেওয়া হয়েছিল।
পর্যটন শিল্প ছাড়াও স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মানিক। ২০০৪ সালের ভয়াবহ সুনামির পর ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপগুলোতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭১ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সরকারি বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এ সময়ে তিনি মালদ্বীপ মুদ্রা কর্তৃপক্ষ (MMA), আইল্যান্ড এভিয়েশন সার্ভিসেস এবং মালদ্বীপ এয়ারপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন।
পর্যটন শিল্পে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি রাষ্ট্রপতির ট্যুরিজম গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড, মিনিভ্যান ২৫ পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পান। দীর্ঘদিন তিনি মালদ্বীপ অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রির (MATI) চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বে মালদ্বীপ বিশ্বমানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
এমইউ মানিক মৃত্যুকালে স্ত্রী, দুই সন্তান ও নাতি-নাতনিদের রেখে গেছেন।