
মোঃ শাহজাহান বাশার: স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা | শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
রাজধানীর শ্যামলীতে ভয়াবহ এক ছিনতাইয়ের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ছিনতাইকারীরা এক যুবকের মানিব্যাগ, কাঁধের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাঁর গায়ের জামা ও পায়ের জুতা পর্যন্ত কেড়ে নেয়। পুরো ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ এখন ভাইরাল।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১১ জুলাই) ভোর ৬টার দিকে শ্যামলী ২ নম্বর রোডে অবস্থিত একটি কাজি অফিসের সামনে। ঘটনার সময় এলাকাটি ছিল ফাঁকা ও জনশূন্য।
শ্যামলী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নিরাপত্তাকর্মীর সরবরাহ করা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ছাতা হাতে এক ব্যক্তি রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছেন। হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল এসে তার গতি রোধ করে। মোটরসাইকেলে থাকা তিন দুর্বৃত্তের মধ্যে একজন প্রথমে ভুক্তভোগীকে থামিয়ে দাঁড় করায়। এরপর বাকিরা হেলমেট ও ধারালো অস্ত্রসহ মোটরসাইকেল থেকে নেমে তাঁকে ঘিরে ধরে।
ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীর মানিব্যাগ, ব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে—ভুক্তভোগীর গায়ের জামা এবং পায়ের জুতা পর্যন্ত খুলে নেয় এবং তাকে সম্পূর্ণরূপে বিব্রত ও অসহায় অবস্থায় ফেলে রেখে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ছিনতাইকারীদের একজন খালি গায়ে ছিল, বাকিরা হেলমেট পরে ছিল। এই ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
আজ শনিবার (১৩ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক। তিনি বলেন, “ঘটনার পরপরই সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের নজরে এসেছে। এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে আমরা ভিডিও বিশ্লেষণ করে ছিনতাইকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করছি।”
ওসি আরও জানান, “আমি নিজেই ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। যদি ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়, তাহলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভোরের সময় ছিনতাইয়ের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। ফাঁকা রাস্তাকে টার্গেট করে এমন দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, নিয়মিত টহল এবং দৃশ্যমান পুলিশি উপস্থিতি না বাড়ালে এসব অপরাধ ঠেকানো সম্ভব হবে না।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে পুলিশ সূত্র বলছে, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সন্দেহভাজনদের শনাক্তের কাজ চলছে।
ওসি ইমাউল হক বলেন, “যদি কেউ ভুক্তভোগীকে চিনে থাকেন বা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, দয়া করে থানায় জানান। তাঁর সহযোগিতায় আমরা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নিতে পারব।”
এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে ভোররাতে চলাচলকারী নাগরিকরা পড়ছেন বড় ধরনের ঝুঁকিতে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এমন দুঃসাহসিক ছিনতাইয়ের ঘটনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নগরবাসী।