ভেড়ামারায় সেনাবাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র ও মানুষের খুলি উদ্ধার

মোঃ শাহজাহান বাশার,স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় এক চাঞ্চল্যকর অভিযানে সেনাবাহিনী উদ্ধার করেছে একটি পরিত্যক্ত ওয়ান শুটার গান এবং একটি মানুষের মাথার খুলি। অভিযানে জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে এক দোকানদারকে। এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকাজুড়ে চরম আতঙ্ক ও রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।জানা যায়, সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে ভেড়ামারা উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানের প্রথম পর্যায়ে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির নিকটবর্তী ঝোপঝাড়ে ১টি ওয়ান শুটার গান উদ্ধার করা হয়।

এরপর স্থানীয়ভাবে তথ্য নিয়ে অভিযান চালানো হয় পাশের এক দোকানে। সেখানেই ঘটে চাঞ্চল্যকর ঘটনা—মোঃ মাহমুদ আলী (ইমরান) নামে এক দোকানদারের দোকান ঘরের ভেতর থেকে একটি মানুষের মাথার খুলি উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।

আটক ব্যক্তির নাম: মোঃ মাহমুদ আলী (ইমরান),পিতা: সফর রদদিন,ঠিকানা: রামচন্দ্রপুর, ভেড়ামারা, কুষ্টিয়াতাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গোপনের অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

উদ্ধার হওয়া খুলি নিয়ে এখন নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। এটি কোনো হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ, নাকি তন্ত্র-মন্ত্র বা কুসংস্কারের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো বস্তু—তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, খুলিটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। ফরেনসিক বিশ্লেষণ শেষে জানা যাবে, এটি পুরাতন কোনো কবর থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, নাকি সাম্প্রতিক কোনো অপরাধের আলামত।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রামচন্দ্রপুর এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক। অনেকেই হতবাক হয়ে পড়েছেন। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন—

“এই দোকানে আমরা প্রতিদিনই চা খেতে আসতাম। কখনো কল্পনাও করিনি এমন কিছু এখানে লুকিয়ে থাকতে পারে। এখন তো ভয়েই দোকানমুখো হতে পারছি না।”

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, সেনাবাহিনীর এই অভিযান ছিল পূর্ব পরিকল্পিত এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত। উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র এবং খুলির বিষয়ে আলাদা আলাদা তদন্ত শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে, এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে এবং তদন্ত সেভাবেই এগোচ্ছে।

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন—আমরা অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে তদন্তের পরিধি বাড়ানো হবে। এ ঘটনায় দুটি ধারায় মামলা করা হতে পারে—একটি অস্ত্র আইনে এবং অপরটি মানবদেহ সংরক্ষণ ও গোপনে রাখার অভিযোগে।”

ভেড়ামারার রামচন্দ্রপুরের এই ঘটনা শুধু স্থানীয় নয়, বরং জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ এটি শুধু একটি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা নয়, বরং একটি মানুষের খুলি উদ্ধারের সঙ্গে জড়িত, যা বড় ধরনের অপরাধ বা অন্য কোন গোপন কর্মকাণ্ডের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এখন সকলের দৃষ্টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তের দিকে—কী উঠে আসে তাদের অনুসন্ধানে, সেটাই সময় বলে দেবে।