
নিজস্ব প্রতিবেদক।
রাজনীতিতে নেতৃত্বের শুরুটা অনেকের হয় কেবল উচ্চাশা থেকে, কিন্তু মোঃ জালাল উদ্দিন খানের যাত্রা শুরু হয়েছিল আদর্শ ও প্রতিবাদের এক বিশুদ্ধ জায়গা থেকে। কুমিল্লার এক গ্রামের সাধারণ এক ছাত্র থেকে জাতীয় পর্যায়ের দৃঢ়চেতা নেতায় পরিণত হওয়ার এই গল্প আজ অনেকের অনুপ্রেরণার উৎস।
একটি গ্রামের ছেলেবেলা ও নেতৃত্বের বীজ
মোঃ জালাল উদ্দিন খান কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ২নং বাকশিমুল ইউনিয়নের আজ্ঞাপুর গ্রামের সন্তান। পিতা ছিলেন একজন প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা, যিনি পরে কৃষিকাজে যুক্ত হন। মা ছিলেন একজন সাধারণ গৃহিণী। জালালের শৈশব কেটেছে সাদামাটা জীবনযাপনের মাঝেই, কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের স্পষ্ট গুণাবলি দেখা যায়।
স্কুলে পড়ার সময় থেকেই তিনি বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতেন। তখন থেকেই রাজনীতির প্রতি একটি দুর্বলতা এবং দায়িত্ববোধ তৈরি হয়।
ছাত্ররাজনীতিতে প্রবেশ ও প্রথম প্রতিবাদ
স্কুলজীবন শেষে কলেজে ভর্তি হয়ে জালাল বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন।
প্রথমদিকে মিছিল-মিটিংয়ে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই তাঁর রাজনীতির সূচনা হলেও, শীঘ্রই তাঁর সৎ সাহস, নেতৃত্বগুণ এবং বক্তৃতার দক্ষতায় সংগঠনের দায়িত্বশীল পদে পৌঁছে যান।
তাঁর ছাত্ররাজনীতির অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো—একবার কলেজ প্রশাসন একটি তুচ্ছ কারণে কয়েকজন ছাত্রকে বহিষ্কার করে। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জালাল নেতৃত্বে গড়ে ওঠে জোরালো আন্দোলন। ফলস্বরূপ, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
এই ঘটনাই তাঁকে কলেজের সাহসী ও জনপ্রিয় ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিতি এনে দেয়।
নীতিনিষ্ঠ রাজনীতি ও নিরন্তর সংগ্রাম:
ছাত্রজীবন শেষে জালাল খান রাজনীতিকে শুধুমাত্র পেশা নয়, বরং সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেন। বিগত ১৭ বছর ধরে তিনি ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
তিনি কখনো ক্ষমতার জন্য নীতি বিসর্জন দেননি, কখনো আপোষ করেননি আওয়ামী স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে। জালাল পরিচিত হয়েছেন নির্লোভ, নিরহংকারী এবং মানবিক একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে।
বিপর্যয়ের সময় পাশে দাঁড়ানো নেতা:
২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যা তাঁর নেতৃত্বের আরেকটি উজ্জ্বল উদাহরণ।বন্যায় যখন হাজারো মানুষ পানিবন্দি, তখন তিনি নিজে মাটি ও মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান।
তাঁর নেতৃত্বে গঠিত স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমে অসামান্য ভূমিকা রাখে। স্থানীয় ও জাতীয় মিডিয়ায় এ নিয়ে প্রশংসাও ছড়িয়ে পড়ে।
ভবিষ্যতের লক্ষ্য ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি:
একান্ত সাক্ষাৎকারে মোঃ জালাল উদ্দিন খান বলেন:
> “আমার উদ্দেশ্য রাজনীতি করে সমাজ থেকে অন্যায়, অনিয়ম এবং মাদক দূর করা। শিক্ষার্থী ও তরুণদের নিয়ে আমি একটি হিংসা, অহংকারমুক্ত সুন্দর সমাজ গড়তে চাই। আমি বিশ্বাস করি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বেই এই দেশ আবার জনগণের রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হবে।”
জালাল খান কেবল একজন রাজনীতিক নন—তিনি সময়োপযোগী, মানবিক ও সংগ্রামী এক নেতৃত্বের প্রতীক। ছাত্রজীবনের ক্ষুদ্র প্রতিবাদ থেকে শুরু করে জাতীয় দুর্যোগে নেতৃত্বদানের মাধ্যমে তিনি আজ অনেকের কাছে একজন সত্যিকারের জননেতা।