
**সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, বহিষ্কারের দাবি**
মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আংশিক কমিটিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা মো. রাফি আলীকে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে মনোনয়ন দেওয়ায় ছাত্রদলের ভেতর তীব্র ক্ষোভ ও আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
জানা গেছে, মো. রাফি আলী এর আগে ছাত্রলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। এমনকি তার বড় ভাই রোহান আলীও ছিলেন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের জামবাড়ীয়া কলেজ কমিটির সহ-সভাপতি। তাদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
এমন প্রেক্ষাপটে ছাত্রদলের মতো বিএনপিপন্থী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকে বসানোয় দলের নীতি-আদর্শ নিয়ে উঠেছে গুরুতর প্রশ্ন।
উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মো. মোহসীন আরাফাত সানি বলেন, “যাকে সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয়েছে তিনি একসময় ছাত্রলীগ করতেন। তাকে ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো মানেই সংগঠনের আদর্শ ও নৈতিকতার চরম অপমান।”
তিনি বলেন, “যারা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীকে ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান দিতে পারে, তাদের ছাত্রদল করার কোনো অধিকার নেই। আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাই, দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোলাহাট উপজেলা ছাত্রদলের একাংশ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. ইউসুফ রেজা এবং সদস্য সচিব মো. সাদ্দাম হোসেনকে ‘অযোগ্য’ আখ্যা দিয়ে তাদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে। তারা মনে করেন, এমন একজনকে মনোনয়ন দেওয়ার মাধ্যমে তারা দলের আদর্শ ও সাংগঠনিক নিয়ম ভঙ্গ করেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, “জামবাড়ীয়া কলেজ শাখার কমিটি গঠনের জন্য আমরা স্থানীয় সাবেক ও বর্তমান নেতাদের নিয়ে একটি সাংগঠনিক টিম গঠন করেছিলাম। সেই টিমই আংশিক কমিটি দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়টি আমরা ফেসবুকে দেখে জেনেছি। যদি লিখিত অভিযোগ আসে, তাহলে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।”
এ ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে, ছাত্রদলের আদর্শিক অবস্থান ও সাংগঠনিক শুদ্ধতা রক্ষায় বড় ধাক্কা লেগেছে। স্থানীয় কমিটিতে অযোগ্য এবং রাজনৈতিকভাবে বিপরীতমুখী নেতাকে স্থান দেওয়া মানেই ছাত্রদলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। তাই তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা আশা করছেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল দ্রুত এই ঘটনা তদন্ত করে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।