
মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
উম্মাহর ঐক্যের জন্য ইমাম হাসান (আ.)’র মতো বিরল দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে দ্বিতীয়বার দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন মাইজভান্ডার দরবার শরীফের পীর ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওলানা হযরত শাহসুফি ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভান্ডারী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী। রবিবার (১৬ মার্চ) ১৫ রমজান রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল এলাকায় খানকায়ে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার হলরুমে প্রিয় নবী (দ.)’র দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (আ.)’র বিলাদত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, নবীকরিম (দ.) তার ওফাতের পর যে ৩০ বছর সময়কে খেলাফতের যুগ বলেছেন, সে হিসেবে ইমাম হাসান (আঃ) মুসলিম জাহামের ৫ম খলিফা। তিনি হযরত শেরে খোদা মওলা আলি (আঃ)র শাহাদাতের পর ৬ মাস খেলাফতের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রিয় নবী (দ.)র মত মদীনা শরীফ থেকে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। অত্যন্ত সফলতার সাথে তিনি রাষ্ট্রে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
অজস্র মানুষ তার হাতে বায়াত গ্রহণ করেছেন। তিনি ইচ্ছা করলে আজীবন রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারতেন। কিন্তু মুসলমানদের মাঝে রক্তপাত যাতে না হয়, ইসলামের একতা, ভাতৃত্ব রক্ষার্থে তিনি নিজ ক্ষমতা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেন। সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, এ সম্পর্কে নবীকরিম (দ.) বলেছিলেন, আমার এই নাতি ইমাম হাসান (আঃ)র কারণে মুসলিম উম্মাহ্ অনেক বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবে। এ এক বিরল দৃষ্টান্ত, মহানুভবতা যা পৃথিবীতে দ্বিতীয়বার দেখা যায়নি। তিনি আরও বলেন, ইমাম হাসান (আ.) সত্য, ন্যায়, ধৈর্য ও আত্মত্যাগের সমুজ্জ্বল আদর্শ। তার চেহারা মুবারকের মাঝে রাসুলে করিম (দ.)র চেহারা মুবারক দৃশ্যমান ছিল। তিনি পাক পাঞ্জাতনের একজন। তিনি ও তার স্নেহধন্য ছোট ভাই ইমাম হোসাইন (আঃ) জান্নাতে যুবকদের মহান নেতা। রক্তপাত, সংঘাত থেকে মুসলিম জাহানকে রক্ষা করতে তিনি স্বীয় ক্ষমতা ত্যাগ করার মত মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও, খারেজি মুনাফিক চক্র তাকে ৩ বার বিষপান করায় এবং তিনি শাহাদাত বরণ করেন। যারা তাকে নির্মমভাবে শহিদ করেছিলো, তাদেরকে তিনি চিনতেন। কিন্তু
তাদের পরিচয় প্রকাশ করেন নি কারণ এ বিষয় নিয়ে তিনি মুসলিম উম্মাহর মাঝে সংঘাত চান নি। তিনি মহান আল্লাহ্ ও রাসুলে করিম (দ.)’র নিকট এর বিচার জানিয়েছেন। বর্তমান সংঘাতময় বিশ্বে যদি ইমাম হাসান (আঃ)র আদর্শে উজ্জীবীত সুযোগ্য নেতৃত্ব থাকতো তবে পৃথিবী শান্তির নীড়ে পরিণত হত বলেও মন্তব্য করেন হযরত সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী। এসময় বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম, দরবারের খলিফাবৃন্দ, আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া, মইনীয়া যুব ফোরামের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। মিলাদ কিয়াম শেষে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী মাইজভান্ডারী।