বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৭০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দুইটার দিকে ব্রজমোহন কলেজ ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থী আমান জানান, মধ্যরাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বাস, একটি ছোট ট্রাকভর্তি শিক্ষার্থীরা এসে আমাদের ক্যাম্পাসে হামলা চালায়। যাকে যেখানে যেভাবে পেয়েছে পিটিয়ে আহত করেছে। অনেকের মাথা ফেটেছে, অনেকে মারাত্মক জখম হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা কলেজের তিনটি গাড়িও ভাঙচুর করেছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ বলেন, আমাদের বাসে ব্রজমোহন কলেজের কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী ভাঙচুর চালায়। এসব বিষয়ে কথা বলতে কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের দেখেই হামলা চালায়। আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন।
গত কয়েকদিন ধরেই উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এক নির্মাণাধীন ভবন নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, নগরীর বাংলাবাজার এলাকার ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের এক নারীর ভবন নির্মাণ বন্ধ করে রেখেছে ওই নারীর প্রতিবেশী একটি পক্ষ। এ বিষয়ে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করে ঘটনাস্থলে এনে কাজ শুরু করার চেষ্টা চালান ওই নারী। ব্রজমোহন কলেজের সমন্বয়কারীদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের ওই বাড়িতে যান একদল শিক্ষার্থী।
খবর পেয়ে ওই নারীর প্রতিপক্ষের মেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ঘটনাস্থলে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে আসেন। এ সময় মোস্তাফিজকে মারধর করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার মানববন্ধনের আয়োজন করে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওইদিকে মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে চাঁদাবাজির অভিযোগে মারধর করা হয়। তাঁদের উদ্ধারে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাস নিয়ে ঘটনাস্থলে যান।
পরে বাসটি ভাঙচুর করে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসব ঘটনার সূত্র ধরে রাত দুইটার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে এসে হামলা-ভাঙচুর চালায়।সরকারি ব্রজমোহন কলেজের প্রশাসনিক কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, পরে দৈনিক আওয়ার বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিনিধি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী উপাচার্য জনাব মহসিন স্যারের সাথে মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে ঘটনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ এর তেমন কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি বলে জানান তবে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনীর অবস্থান ও ভূমিকা রেখেছেন। আজ সকাল ১০:৩০ মিনিটে উভয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা কাজ করছেন। উভয় কলেজের এর কর্তৃপক্ষের সাথে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান। বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক আছে জানিয়েছেন।
এএনবি২৪ /বাশার