মালদ্বীপ থেকে প্রথম ধাপে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা আজ রোববার শুরু হচ্ছে। মালদ্বীপের চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ মুইজ্জু ৮৯ ভারতীয় সেনাকে ১০ মার্চ থেকে আগামী মে মাসের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। খবর বিবিসির
চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুইজ্জু সরকার ঘোষণা দেয়, ১৫ মার্চের মধ্যে মালদ্বীপে থাকা ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তবে গত মাসে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়, ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হয়েছে, ধাপে ধাপে সৈন্য সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রথম ধাপে ১০ মার্চ এবং দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১০ মের মধ্যে সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে।
ভারত জানায়, তারা মালদ্বীপকে দুটি হেলিকপ্টার ও একটি ডর্নিয়ার উড়োজাহাজ দিয়েছে। এগুলো মূলত সমুদ্রে নজরদারি এবং দুর্যোগের সময় উদ্ধার অভিযান ও অসুস্থ ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। এ হেলিকপ্টার ও উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য সামরিক কর্মকর্তারা মালদ্বীপে অবস্থান করছিলেন।
গত নভেম্বরে মোহামেদ মুইজ্জু ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে চীনের সঙোগ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ব্যপারে জোর দেন। তিনি ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসেন। তিনি তখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি জয়ী হলে মালদ্বীপের মাটি থেকে ভারতের সৈন্যদের সরিয়ে দেবেন। একই সঙ্গে দেশের সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনবেন।
ভৌগলিক নৈকট্য এবং ঐতিহাসিক ও শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে কয়েক দশক ধরে েভারত মালদ্বীপেরর বেশ ঘনিষ্ঠ অংশীদার। নয়াদিল্লি ঐতিহাসিকভাবে এ অঞ্চলকে তার প্রভাব বলয়ের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ভারত ও চীনের ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মালদ্বীপ। দুই দেশই এখানে নিজেদের প্রভাব সুসংহত করতে চায়। কয়েক মাস আগে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে মুইজ্জুর কট্টর বার্তা দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটায়। চীন ধীরে ধীরে মালদ্বীপে তার প্রভাব বাড়িয়ে চলেছে।
২০ কোটি টাকা ব্যয়ে চীন-মালদ্বীপ মৈত্রী সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে দেশটিতে চীনের প্রভাব দৃশ্যমান হতে থাকে। তবে মালদ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলেও সেখানে হেলিকপ্টার ও উড়োজাহাজ পরিচালনার জন্য ভারতের বেসামরিক কর্মকর্তারা যুক্ত হবেন বলে দুই পক্ষই সম্মত হয়েছে। ইতিমধ্যে ভারতীয় কর্মকর্তারা মালে পৌঁছেছেন।
ভারতের সোবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যাম বরণ বলেন, ভারতের দেওয়া হেলিকপ্টার ও উড়োজাহাজ মালদ্বীপে থাকবে। সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করবেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। দুই পক্ষই সমঝোতায় পৌঁছেছে। তবে সামরিক কর্মকর্তাদের বদলে বেসামরিক কর্মকর্তাদের কাজ চালিয়ে যেতে অনুমতি দেওয়াকে মুইজ্জু সরকারের পিছু হটা বলে উল্লেখ করেছেন কেউ কেউ। তবে মুইজ্জুর কার্যালয় থেকে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।