
মো. শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মাড়কোল সাহাপুকুর এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম তুহিন এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. আমিনুল ইসলামের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা চলছিল। সম্প্রতি দলের অভ্যন্তরীণ অবস্থান ও নেতৃত্বে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে তিন দিন আগে। তখন আব্দুস সালাম তুহিনের সমর্থকরা আমিনুল ইসলামের অনুসারী তরিকুল, কামরুল ও শফিকুলকে মারধর করে। এ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার সকালে পাল্টা হামলা চালায় আমিনুল ইসলামের সমর্থকরা। হামলায় অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হন, যাদের সবাই আব্দুস সালাম তুহিনের পক্ষের সমর্থক বলে জানা গেছে।
আহতদের স্বজনদের অভিযোগ, সাবেক এমপি আমিনুল ইসলামের নির্দেশে তাঁর অনুসারীরা লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর ও কয়েক দফা মারামারির ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে নাচোল থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের উদ্ধার করে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল দলীয় ঐক্যে বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এই বিভক্তি বারবার সংঘর্ষ ও সহিংসতার জন্ম দিচ্ছে।
এদিকে, সাধারণ ভোটার ও স্থানীয় বাসিন্দারা এমন রাজনৈতিক সহিংসতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, দলীয় কোন্দলের কারণে এলাকার শান্ত পরিবেশ বারবার নষ্ট হচ্ছে, যা সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি তৈরি করছে।






