
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১০ হাজার কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। অনেকের অভিযোগ, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এ ছাঁটাই কার্যক্রম চালানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে ৫ হাজার ৩৪৭ জন, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৫০ জন, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৬০৫ জন, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক থেকে ৫৪৭ জন এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
চাকরিচ্যুতদের মধ্যে এসভিপি, সিনিয়র অফিসার, অফিসার, জুনিয়র অফিসার (ক্যাশ) ও পিয়ন পদমর্যাদার কর্মচারী রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৭ হাজারই চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার অধিবাসী, বাকিরা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা।
গত ২৯ আগস্ট ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্মচারীদের জন্য ‘দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা’ ঘোষণার পর কর্মচারীরা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ওপর রুল নিশি জারি করে জানতে চান, দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। একইসাথে আদালত প্রমোশন পরীক্ষার নির্দেশ দেন।
তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ২৭ সেপ্টেম্বর পুনরায় পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে। ঘোষিত পরীক্ষায় ৫,৫০০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৩১৭ জন অংশ নেন। অংশ না নেওয়া বাকিদের এক সপ্তাহের মধ্যে চাকরিচ্যুত করা হয়।
ইসলামী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা সুমন (ছদ্মনাম) বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর প্রভাবশালী নেতাদের নির্দেশে জামায়াত ঘরানার লোকদের নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এসব ছাঁটাই করা হয়েছে।”
অন্যদিকে সোহরাব উদ্দিন নামে আরেক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা অনেকেই এসএসসি, এইচএসসি ও মাস্টার্সে ভালো ফল করে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে চাকরি পেয়েছিলাম। অনেকে ৬-৭ বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছে। এখন কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হলো। এটা অত্যন্ত অমানবিক।”
তিনি আরও বলেন, “প্রায় ১০ হাজার কর্মচারীর সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫৫ হাজার পরিবারের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। ব্যাংকগুলোতে এখন হাহাকার বিরাজ করছে।”






