
মোঃ শাহজাহান বাশার,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-তে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী ড. শহিদুল আলমসহ সকল যাত্রীর নিরাপত্তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (৪ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি জানান, সরকার এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে ফ্লোটিলায় থাকা যাত্রীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। ড. ইউনূস বলেন,“আমরা শহিদুল আলম ও গাজার পাশে আছি এবং থাকব।”
তিনি আরও বলেন,“২০১৮ সালে হাসিনা সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে যখন শহিদুল আলমকে ১০৭ দিন কারাবরণ করতে হয়েছিল, তখন তিনি যে সাহস ও দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছিলেন, গাজার উদ্দেশে এই মানবিক মিশনেও তিনি একই অদম্য মানসিকতা নিয়ে অংশ নিয়েছেন। শহিদুল আলম আজ বাংলাদেশের অদম্য চেতনার উজ্জ্বল প্রতীক।”
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস উল্লেখ করেন,“গত মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সামনে আমি যেমন বলেছিলাম— সংগ্রামের মাধ্যমে মানবজাতি যে অগ্রগতি গড়ে তুলেছে, তা আজ ধ্বংসের মুখে। গাজার চেয়ে এই মর্মান্তিক বাস্তবতা পৃথিবীর আর কোথাও এত গভীরভাবে দৃশ্যমান নয়।”
তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলেন,“গাজায় শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে, নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে বেসামরিক নাগরিকদের। হাসপাতাল, স্কুল, ঘরবাড়ি— সবকিছু ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। পুরো এলাকাকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার এক নৃশংস প্রচেষ্টা চলছে।”
ড. ইউনূসের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার ও মানবিক সংস্থা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গাজার মানবিক সংকট নিয়ে এমন নৈতিক ও মানবতাবাদী অবস্থান বিশ্বজুড়ে গাজার পক্ষে সহানুভূতি ও ঐক্যকে আরও দৃঢ় করবে।
উল্লেখ্য, ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক মানবিক নৌমিশন, যার লক্ষ্য গাজায় অবরুদ্ধ জনগণের কাছে খাদ্য, ওষুধ ও জরুরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।এতে বিভিন্ন দেশের মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও শান্তিকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও অধিকারকর্মী ড. শহিদুল আলম এই অভিযাত্রায় যুক্ত হয়েছেন।
মানবিক এই মিশন বর্তমানে ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করছে এবং যাত্রাপথে অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা ও অবস্থান নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, ড. ইউনূসের এই বিবৃতি শুধু গাজার মানবিক বিপর্যয়ের প্রতি সহানুভূতি নয়, বরং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মানবতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থানের প্রতিফলন।