প্রিয় পাঠক, সহকর্মী ও সমাজের দায়িত্বশীল মানুষ,

মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:

সাংবাদিকতা কোনো সাধারণ পেশা নয়; এটি মানুষের কণ্ঠস্বর তুলে ধরার, সত্যকে প্রকাশ করার এবং ক্ষমতাকে জবাবদিহির মধ্যে রাখার এক মহৎ দায়িত্ব। কিন্তু আজ যখন সমাজ ও রাষ্ট্র এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে, তখন সাংবাদিকতার ভূমিকাও বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে। এই চিঠি সেই দায়িত্বের জায়গা থেকেই লেখা।

আমরা সবাই জানি, সাংবাদিকতার মূল ভিত্তি হলো—সত্য, ন্যায়, নিরপেক্ষতা ও সাহস। কিন্তু বাস্তবে সাংবাদিকদের কাজ অনেক সময় নানা বাধা-বিপত্তি, রাজনৈতিক চাপ, অর্থনৈতিক অনটন, এমনকি প্রাণনাশের হুমকির মধ্যে দিয়ে চলতে হয়। সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে বহু সাংবাদিক আজ কারাবন্দি, নির্যাতিত কিংবা জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছেন। তবুও প্রশ্ন জাগে—এই লড়াই থেমে গেলে সমাজে আলো জ্বালাবে কে?

সাংবাদিকতার শক্তি কলমে, তথ্যপ্রকাশে এবং মানুষের আস্থায়। কিন্তু এই শক্তিকে ব্যবহার করতে হলে সাংবাদিকদের নিজেরাও হতে হবে সৎ, দায়িত্বশীল ও পেশাদার। পক্ষপাতদুষ্ট খবর, ভুয়া তথ্য, মিথ্যা প্রচারণা কিংবা ব্যক্তিগত স্বার্থ সাংবাদিকতার মহৎ উদ্দেশ্যকে কলুষিত করে। তাই আমাদের সবার আগে আত্মশুদ্ধি প্রয়োজন।

রাষ্ট্র ও সমাজকেও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কখনোই সংবাদপত্রকে শত্রু মনে করতে পারে না; বরং সংবাদপত্র রাষ্ট্রের আয়না, যা ভুল দেখিয়ে দেয়, সঠিক পথের নির্দেশ দেয়। স্বাধীন সাংবাদিকতা ছাড়া উন্নত গণতন্ত্র কল্পনাও করা যায় না।

প্রিয় সহকর্মী সাংবাদিকেরা, মনে রাখবেন—আমরা শুধু খবর লিখি না, আমরা ইতিহাসও লিখে যাচ্ছি। আমাদের একটি প্রতিবেদন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দলিল হয়ে থাকবে। তাই প্রতিটি শব্দ লিখতে হবে দায়বদ্ধতার সঙ্গে, প্রতিটি খবর পরিবেশন করতে হবে সততার সঙ্গে।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, সাংবাদিকতা আপনাদের জন্যই। আপনাদের আস্থা, সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া সাংবাদিকরা শক্তি হারায়। তাই আপনাদেরও উচিত গণমাধ্যমের প্রতি আস্থা রাখা, ভুয়া খবর থেকে সাবধান থাকা এবং সত্যকে সমর্থন করা।

শেষ কথা হলো—সাংবাদিকতা শুধু পেশা নয়, এটি একটি সংগ্রাম। সত্য, ন্যায় ও মানবতার পক্ষে আমাদের এই সংগ্রাম কখনোই থেমে থাকতে পারে না।

সবার প্রতি শুভেচ্ছা।
মোঃ শাহজাহান বাশার,
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার