
নিউজ ডেস্ক
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় এক বৃদ্ধ নৈশপ্রহরীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা দেলোয়ার হোসেন দোলনের বিরুদ্ধে। দেলোয়ার হোসেন দোলন বুড়িচং উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ও বুড়িচং বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত প্রায় আড়াইটার দিকে বাজার পাহারার সময় কিছুটা বিশ্রামের জন্য বুড়িচং পূর্ব পাড়ার দুলা মিয়া এক মোড়ে বসেন। ঠিক তখনই যুবদল নেতা দেলোয়ার হোসেন সেখানে উপস্থিত হন। পাহারাদারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি কাঠের দণ্ড দিয়ে দুলা মিয়াকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন। এতে বৃদ্ধ নৈশপ্রহরীর পিঠ ও ঘাড়ে একাধিক আঘাত লাগে।
পিটিয়ে আহত হওয়ার পর দুলা মিয়াকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ অভিযোগ করছেন, একজন শ্রমজীবী বৃদ্ধ নৈশপ্রহরীর সঙ্গে এমন বর্বর আচরণ মানবিকতার পরিপন্থী।
বুড়িচং গ্রামের শাহাদাত হোসেন বলেন, “বুড়িচং বাজার কমিটির সেক্রেটারি বুড়িচং পূর্ব পাড়ার দুলা মিয়ার উপর নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে। এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি দোষী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কুমিল্লা উত্তর জেলা সভাপতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, “বুড়িচং পূর্ব পাড়ার সকল মানুষ হাসপাতালে অবস্থান করছে। আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।”
হাসপাতালের বেডে শুয়ে দুলা মিয়া সাংবাদিকদের বলেন,”তুই কি সাব হয়েছিস নাকি বলে আমার হাতের লাঠি দিয়ে আমাকে আঘাত করে। তিনি আমাকে কুকুরের মতো পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। প্রাণ বাঁচাতে তাঁর পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে হয়। তবুও তিনি ক্ষান্ত হননি। পরে অন্য পাহারাদাররা এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।”
নৈশপ্রহরীকে পিটিয়ে আহত করার বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন দোলন বলেন,”দুই দিন আগে বাজার থেকে মোবাইল চুরি হয়েছে। আমরা বাজারে পাহারাদার রেখেছি যেন চুরি-ডাকাতি না হয়। কিন্তু উনি পাহারায় বসে সজাগ না থেকে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আমরা বলেছিলাম রাতের সময় কোন মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না। আমি গতকাল রাতে দুইবার উনার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম, কিন্তু উনি বলতে পারেননি কে এসেছে। এ কারণেই ঝামেলা হয়েছে।”
বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন,”বাজারে একটি ঘটনার কথা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা দ্রুত প্রশাসনের মাধ্যমে অভিযুক্তকে শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে জোর দিচ্ছেন।