
মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান কালাম, মালে, বৃহস্পতিবার:
মালদ্বীপের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাজারে পণ্যের দামের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি সরাসরি ডলারের ঘাটতি ও মার্কিন মুদ্রার মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। আমদানি-নির্ভর দেশ মালদ্বীপে কালোবাজারে ডলারের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে এবং তা ধারাবাহিকভাবে ২০ এমভিআরের বেশি রয়েছে। এর প্রভাব সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে পড়ছে—যেখানে আগে পাঁচ রুফিয়ায় পাওয়া যেত একটি আপেল, এখন তার দাম ১০ রুফিয়ারও বেশি।
দেশের শীর্ষ ফল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান উফানভেলি-র অপারেশনস ম্যানেজার আব্দুর রহমান গাদির বলেন, “ডলারের সংকট ও দীর্ঘ লজিস্টিক রুটের কারণে আপেল-কমলাসহ আমদানি পণ্যের দাম বাড়ছে। সংকট কেটে গেলে দামও কমে আসবে।”
স্থানীয় বাজারের বিক্রেতারাও নিশ্চিত করেছেন, সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ফলমূল ও শাকসবজির। তারা জানাচ্ছেন, সারসহ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিক্রয়ও কমেছে, কারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে শহরে খাদ্যের দাম বেড়েছে ১.৬২ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু ফলমূলের দাম গত বছরের তুলনায় মাসে বেড়েছে ৬.১৩ শতাংশ এবং বার্ষিক বেড়েছে ১০.২ শতাংশ।
তবে সরকারের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। গত এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট ড. মোহামেদ মুইজ্জু ঘোষণা দেন, ২০২৭ সালের মধ্যে ডলারের দাম ব্যাংক হারে নামিয়ে আনা হবে। অর্থমন্ত্রী মোহামেদ সাঈদও বারবার আশ্বাস দিয়েছেন, সংকট নিরসন হবে এবং ডলারের দাম কমবে। কিন্তু বাস্তবে ডলারের প্রাপ্যতা সীমিত এবং মূল্য ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী।
এই পরিস্থিতিতে শুধু বাজার নয়, রেস্তোরাঁর খরচও মাসে মাসে বাড়ছে। ফলে ক্রেতা-ভোক্তা দুই পক্ষই চাপে পড়ে যাচ্ছেন। জনগণ মনে করছেন, বর্তমান বেতন কাঠামো ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে একেবারেই অপ্রতুল হয়ে পড়েছে।