বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে ফের কলিং ভিসার কোটা উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া। নতুন এ সিদ্ধান্তের আওতায় দেশটিতে মোট ২৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫৬ জন বিদেশি শ্রমিক নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসিউশন ইসমাইল এক ঘোষণায় এ তথ্য জানান। মালয়েশিয়ার প্রধান প্রধান গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে।

দুই বছর পর উন্মুক্ত হচ্ছে কোটা

দীর্ঘ চার বছরের নিষেধাজ্ঞার পর ২০২২ সালের ৯ আগস্ট মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করা হয়। তবে সাত মাসের মাথায় ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ দেশটির তৎকালীন মানবসম্পদমন্ত্রী ভি শিবকুমার এক ঘোষণায় বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটা অনুমোদন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানান। প্রায় দুই বছর স্থবির থাকার পর এবার পুনরায় নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করছে দেশটি।

যৌথ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত

মঙ্গলবার বিদেশি কর্মী নিয়োগ বিষয়ক মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটির এক বৈঠকে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে কলিং ভিসার কোটা পুনরায় উন্মুক্ত করার পাশাপাশি নতুন শর্ত ও অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নির্ধারণ করা হয়।

১৩টি খাতে আবেদন গ্রহণ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসিউশন ইসমাইল জানান, কৃষি, বাগান ও খনি খাতসহ মোট ১৩টি উপখাতে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের আবেদন গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে সার্ভিস সেক্টরের হোলসেল অ্যান্ড রিটেল, ল্যান্ড ওয়্যারহাউস, সিকিউরিটি গার্ড, মেটাল অ্যান্ড স্ক্র্যাপ, রেস্তোরাঁ, লন্ড্রি, কার্গো এবং বিল্ডিং ক্লিনিং খাত উল্লেখযোগ্য।

নির্মাণ ও উৎপাদন খাতে নতুন শর্ত

তিনি আরও জানান, নির্মাণ খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের অনুমতি শুধু সরকারি প্রকল্পের জন্য দেওয়া হবে। আর উৎপাদন খাতে (ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর) অগ্রাধিকার দেওয়া হবে মালয়েশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (MIDA)-এর আওতাধীন নতুন বিনিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে।

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কঠোরতা

নতুন ব্যবস্থায় বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে আবেদন করার সুযোগ থাকবে শুধুমাত্র খাতভিত্তিক অফিসিয়াল এজেন্সিগুলোর জন্য। কোনো ব্যক্তি, স্বতন্ত্র এজেন্ট বা সরাসরি নিয়োগকর্তা স্বাধীনভাবে আবেদন করতে পারবে না। আবেদনগুলো ফরেন ওয়ার্কার্স টেকনিক্যাল কমিটি যাচাই-বাছাই করবে এবং চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে যৌথ কমিটি।

বছরের শেষ পর্যন্ত বহাল কোটা

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, চলতি বছরের শেষ (৩১ ডিসেম্বর ২০২৫) পর্যন্ত শ্রমিক কোটা বহাল থাকবে। এরপর বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ সীমিত করে দেশের মোট শ্রমশক্তির সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া হবে। তবে এই কোটায় বাংলাদেশ থেকে কতসংখ্যক কর্মী আবেদন করতে পারবে, তা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি দেশটির কর্তৃপক্ষ বা গণমাধ্যমগুলো।