
মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা, ১৭ আগস্ট (রবিবার) ২০২৫:
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি অবৈধ গ্যাস ব্যবহার শনাক্তকরণ ও উচ্ছেদে নিয়মিত সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গত ১৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) পেট্রোবাংলা, আশুলিয়া ও সাভারের জরুরি টিমের সহযোগিতায় গাজীপুর জেলার কাজী মার্কেট, ভূঁইয়াপাড়া, সারদাগঞ্জ ও কাশিমপুর এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে প্রায় ১ কিলোমিটার বিতরণ লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত ৫০০টি আবাসিক গ্যাস বার্নারের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং ১০০ মিটার পাইপলাইন জব্দ করা হয়। এতে মাসিক প্রায় ১২ লাখ ৮৪ হাজার ৪৫১ টাকার গ্যাস চুরি রোধ সম্ভব হয়েছে।
একই দিনে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব জনাব মিল্টন রায়ের নেতৃত্বে মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ-৬-এর আওতাধীন মিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে ‘মা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’-এর অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়, ‘ডেনিম এক্সপ্রেস অ্যান্ড ক্লথিং’ ও ‘জি কেয়ার বিডি’-তে অবৈধ সংযোগের আলামত পাওয়া যায় এবং ৩৯৫টি আবাসিক অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় ৪১৮ মিটার পাইপলাইন, ৫টি বার্নার জব্দ ও ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এছাড়া জোবিঅ-জয়দেবপুরের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় ইমার্জেন্সি ম্যানেজারের উপস্থিতিতে স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন গ্রাহকদের সংযোগ ওয়েল্ডিং করে বন্ধ করা হয়। এ সময় বিচ্ছিন্নকৃত গ্রাহকদের মধ্যে ছিলেন:
১। মোঃ আব্দুল হালিম (১৩২-২৭৩৪৮), পূর্ব জয়দেবপুর, গাজীপুর
২। মোঃ রেজাউল ইসলাম (১৩২-৮০৮২), ক্যাডেট কলেজ আবাসিক এলাকা
৩। মোঃ এনায়েত হোসেন (১৩২-৩১১৯৫), মারিয়ালী, গাজীপুর
৪। মোঃ রফিকুল ইসলাম (১৩২-১৬৯৪৫), পশ্চিম জয়দেবপুর, গাজীপুর
৫। নিউ গাজীপুর বিরিয়ানি হাউজ (২৩২-২৩৩), মিতালীপাড়া, গাজীপুর
এছাড়াও পশ্চিম চাপুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২টি অবৈধ/বিলবইবিহীন রাইজারের ৭টি দ্বিমুখী চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও বিভিন্ন ব্যাসের ১০০ ফুট পাইপলাইন জব্দ করা হয়।
অন্যদিকে, মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ-২ ও ভিজিল্যান্স বিভাগের টিম যৌথভাবে কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে বসুন্ধরা রেডিমিক্স সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ চুন কারখানা পরিদর্শন করে। সেখানে গ্রাহকরা পানগাঁও-ধলেশ্বরগামী ২০ ইঞ্চি বিতরণ লাইন থেকে সরাসরি গ্যাস ব্যবহার করছিলেন। পরে অপারেশন বিভাগের সহায়তায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ক্যাপিং করা হয়। একইভাবে নামবিহীন আরও একটি অবৈধ চুন কারখানার ২০ ইঞ্চি×১৪০ পিএসআইজি বিতরণ লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এছাড়া, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব হাসিবুর রহমানের নেতৃত্বে মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ-১ এর আওতাধীন ফতুল্লা, ভুইগড়, তুষারধারা ও গিরিধারাসহ ৭টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় টিপটপ মশার কয়েল (প্রধানীয়া কনজুমার প্রোডাক্টস), রাকি চানাচুর (ভাই ভাই ফুড প্রোডাক্টস), সুচি বিস্কুট (মদিনা এগ্রো ফুড অ্যান্ড বেভারেজ), নিউ একতা ওয়াশ, জাহান ফুড অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রি, রাকি চানাচুর-২ (অবৈধ বিস্কুট কারখানা) ও এন থ্রি ওয়াশিং-এর অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
অভিযানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। এছাড়া ৪২০ ফুট জিআই পাইপ, ১০০ ফুট হোস পাইপ, ৬টি স্টার বার্নার (১৫০ ঘনফুট), ৪০ ফুট প্লাস্টিক হাইড্রোলিক পাইপ, ১টি ব্লোয়ার, ১টি কম্প্রেসার, ১টি বুস্টার, ১টি আবাসিক বার্নার, ২টি আবাসিক রেগুলেটর ও ৩টি এলপি রেগুলেটর জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১৬ আগস্ট পর্যন্ত তিতাস গ্যাসের অভিযানে মোট ২৯৯টি শিল্প, ৩৮১টি বাণিজ্যিক ও ৬৭ হাজার ৪৯৭টি আবাসিক অবৈধ গ্যাস সংযোগসহ ৬৮ হাজার ১৭৭টি সংযোগ এবং ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৯১টি বার্নার বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ২৪৭.৫ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর মিডিয়া ও জনসংযোগ ব্যবস্থাপক মোঃ আল আমিন।