সাত দফা জনগণের দফা, সার্বভৌমত্বের দফা: জামায়াতের সমাবেশে দৃপ্ত ঘোষণা বিডিপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চান

মো. শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা, ১৯ জুলাই ২০২৫:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত সাত দফা ইশতেহারকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতিশ্রুতি এবং জাতীয় বাঁচার শপথ হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চান। আজ বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চান বলেন,“জামায়াতের আজকের সাত দফা কেবল একটি রাজনৈতিক দল বা আন্দোলনের ইশতেহার নয়। এটি হলো জাতির টিকে থাকার শপথ। এই সাত দফা হলো জনগণের দফা, সার্বভৌমত্বের দফা, আত্মনিয়ন্ত্রণের দফা। এই দফাগুলোর বাস্তবায়ন মানেই ইতিহাসের ভারসাম্য পুনর্গঠন।”

তিনি আরও বলেন,“আমরা ক্ষমতার জন্য আন্দোলন করছি না। বরং আমরা চাই জনগণ হোক প্রকৃত ক্ষমতাবান। সিদ্ধান্ত আসুক রাষ্ট্রযন্ত্রের গোপন ঘর থেকে নয়, বরং জনগণের রায় থেকে।”

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন,“জুলাই ২৪ শুধুই একটি তারিখ নয়, এটি আত্মত্যাগের প্রতীক। সে দিন ফ্যাসিবাদের চালকেরা পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়েছিল। কিন্তু আজ তারা নতুন মুখোশে ফিরে এসেছে। কেউ প্রশাসনের চেয়ারে, কেউ কূটনীতির আড়ালে—তাদের মোকাবিলা করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে।”

বিডিপি চেয়ারম্যান বলেন,“আধিপত্যবাদের মূল অস্ত্র হলো বিভাজন। তারা জাতিকে দ্বিধায় ফেলে, মানুষকে মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সেই বিভাজনই স্বাধীনতার ভিত নড়বড়ে করে। তাই ঐক্য ছাড়া মুক্তির কোনো পথ নেই।”

আনোয়ারুল ইসলাম চান আরও বলেন,“এত বড় সমাবেশ দেখে উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। এই জনসমুদ্র আমাদের ওপর একটি বড় দায়িত্ব তুলে দিয়েছে। এখন থেকে আমাদের শপথ– আর কোনো স্বৈরতন্ত্র, আর কোনো কর্তৃত্ববাদ যেন এই মাটিতে ফিরে না আসে।”

তিনি দৃপ্ত কণ্ঠে বলেন,“এই দেশ আমাদের। এই দেশের মানুষের কণ্ঠরোধ করে কেউ কখনো টিকে থাকতে পারেনি, পারবেও না। তাই বলার অধিকারকে ধারণ করতে হবে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। এগুলোই গণতন্ত্রের বাতিঘর।”

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন,“আমাদের লড়াই কোনো আসনে বসার নয়। আমাদের লক্ষ্য হলো একটি বৈষম্যহীন, সার্বভৌম, আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র গড়ে তোলা। এই সংগ্রাম একদিন ইতিহাসে নতুন অধ্যায় লিখবে, যেখানে জনগণই হবে রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিডিপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চান-এর এই বক্তব্য জামায়াতের ঘোষিত সাত দফাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। যেখানে একদিকে আত্মনিয়ন্ত্রণের ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন, অন্যদিকে জনগণকেন্দ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার আহ্বান—এটি জাতীয় রাজনীতিতে নতুন ধারার ইঙ্গিত।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ জামায়াতের দীর্ঘদিন পর এমন শক্তিশালী উপস্থিতি এবং নতুন রাজনৈতিক ঐক্যের সম্ভাবনার এক বড় ইঙ্গিত দিয়ে গেল।