
অনলাইন ডেস্ক।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চারজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। পাশাপাশি এনবিআরের আরেকজন কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তাধীন রয়েছেন আরও ১১ জন কর্মকর্তা। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) থেকে বুধবার বিকেলে জারি করা পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ সংক্রান্ত আদেশ দেওয়া হয়।
বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া কর্মকর্তারা হলেন:
ড. আবদুর রউফ – এনবিআরের সদস্য (চলতি দায়িত্ব), মূসক নীতি
হোসেন আহমদ – সদস্য (গ্রেড-২), শুল্ক নীতি ও আইসিটি
আলমগীর হোসেন – সদস্য (গ্রেড-২), কর
শাব্বির আহমেদ – বরিশাল কর অঞ্চলের কমিশনার (চলতি দায়িত্ব)
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এসব কর্মকর্তার চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং সরকার জনস্বার্থে তাদের চাকরি থেকে অবসর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে তাদের বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। তারা নিয়ম অনুযায়ী সব অবসর-সংক্রান্ত সুবিধা পাবেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১ জুলাই) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। জানা গেছে, গত ২৮ ও ২৯ জুন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস বন্ধ রেখে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আইআরডির আদেশে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ব্যাহত করার কারণে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এনবিআরের আরও ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে এনবিআরের দুইজন বর্তমান সদস্য এবং এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার-এর নাম রয়েছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এনবিআরের ভেতরে দীর্ঘদিন ধরেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার এ ধরনের শুদ্ধি অভিযানে নেমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশাসনিক এই পদক্ষেপকে রাজস্ব বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দৃঢ় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এনবিআরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে দায়বদ্ধতা ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠায় সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে অটল রয়েছে।