
✍️ মাহমুদুল | 🗓️ ১১ জুন ২০২৫ | 🌐 anb24.net
“রাজনীতি ও মতানৈক্য ব্যানার”
বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অস্বস্তিকর বাস্তবতা দিন দিন আরও প্রকট হয়ে উঠছে—একই দলে থেকেও যদি কেউ ভিন্নমত পোষণ করেন, তবে তাকেই দলবিরোধী, বিশ্বাসঘাতক কিংবা ‘পেয়াদার চর’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়। শুরু হয় ব্যানার ছেঁড়া, পোস্টার টেনে নামিয়ে ফেলা, সামাজিকভাবে হেয় করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা।
সম্প্রতি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার এক অনুষ্ঠানে বলেন, রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে, প্রতিহিংসা নয়। কথাটি শোনার পর আশার আলো দেখার সুযোগ থাকলেও বাস্তব চিত্রটি তা নয়। প্রতিহিংসাই যেন এখন রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
রাজনীতিতে মতানৈক্য থাকবে—এটাই স্বাভাবিক। মতের ভিন্নতা মানে পথের বিকল্প খোঁজা। কিন্তু সেই ভিন্নতাকে শত্রুতা হিসেবে দেখা শুরু করলে, দলীয় কাঠামোর মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন হলো—ভিন্নমত মানেই কি বেঈমানি? নাকি সেটিই নেতৃত্বকে সঠিক রাখার দর্পণ?
দলীয় শৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়া মানে হলো গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করা। এই প্রবণতা যে শুধু ব্যক্তি নয়, পুরো রাজনৈতিক দলকেই দীর্ঘমেয়াদে দুর্বল করে দেয়, তা বারবার ইতিহাসে প্রমাণিত।
গণতন্ত্র কোনো একদিনের নির্বাচন নয়—এটি একটি চলমান সংস্কৃতি, যার চর্চা শুরু হয় দলের ভেতর থেকেই। দল যদি নিজের ঘরে ভিন্নমতের প্রতি সহনশীল না হয়, তাহলে বৃহত্তর পরিসরে তা কখনোই বাস্তবায়নযোগ্য নয়।
রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকুক—মতভেদ থাকুক। কিন্তু প্রতিহিংসা যেন না থাকে। কারণ প্রতিহিংসা কখনও গণতন্ত্রের জন্ম দিতে পারে না—তাতে জন্ম নেয় কেবল ভয়, নিঃস্বতা আর নিস্তব্ধতা।