ঘুষের টাকাসহ গাংনীর উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা হাতেনাতে আটক, অভিযানে বাধা এসি ল্যান্ডের

 

মেহেরপুর প্রতিনিধি:
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা জাকির হোসেনকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে আটক করেছে। তার পকেট থেকে ৩৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, যা ঘুষের অর্থ বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছে দুদক।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করে দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি দল। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ রিয়াদ। তার সঙ্গে ছিলেন উপসহকারী পরিচালক সাইদুর রহমানসহ কয়েকজন কর্মকর্তা।

দুদক জানায়, অভিযানে সরকারি পরিচয়পত্র দেখিয়েও তারা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেনের অসহযোগিতার মুখে পড়েন। অভিযানের সময় তিনি তদন্ত কাজে বারবার বাধা দেন এবং চাহিদামতো কোনো রেকর্ডও সরবরাহ করেননি।

সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ বলেন, “জাকির হোসেনের দেহ তল্লাশি করে তার পকেট থেকে ৩৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এ টাকা বিভিন্ন সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে নেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঘুষ বাণিজ্যের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। জমির নামজারি, ভাগ বা খাজনা দিতে গেলেই ঘুষ চাওয়া হয়। এক নারী বলেন, “২০০ টাকার কাজ করতে গিয়ে ২ হাজার টাকা দিতে হয়। আমরা সাধারণ মানুষ শুধু হয়রানির শিকার হই।”

ভুক্তভোগীদের এক জন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, একাধিকবার অফিসে গেলেও ফাইল এক চুলও নাড়েনি—ঘুষ না দেওয়া পর্যন্ত।

অভিযুক্ত জাকির হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে গাংনীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন বলেন, “আমি শুধু দুদক কর্মকর্তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে আইডি দেখতে চেয়েছিলাম। অফিসে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় জানতে চেয়েছিলাম ৩৬ হাজার টাকা কেন জব্দ করা হলো।”

তবে দুদক বলছে, তারা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেছে এবং প্রমাণসহ ঘুষের টাকা উদ্ধার করেছে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, “দুদক যদি অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণসহ উপস্থাপন করে, তাহলে তা ঊর্ধ্বতন প্রশাসনে পাঠানো হবে এবং তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”