
স্টাফ রিপোর্টার: মোঃ শাহজাহান বাশার
রাজধানীর শ্যামপুর থানাধীন দোলাইরপাড় মোড় এলাকায় র্যাব-১০-এর পরিচালিত এক ঝটিকা অভিযানে ৮২ কেজি গাঁজাসহ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাসেল মাহমুদ (৩২) কে আটক করা হয়েছে। এ সময় তার সঙ্গে আরও তিন মাদক চক্রের সদস্যকে আটক করা হয়। অভিযানে একটি পিকআপ ভ্যানও জব্দ করেছে র্যাব সদস্যরা।
বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোররাতে শ্যামপুরের দোলাইরপাড় মোড় এলাকায় র্যাব-১০ এর একটি বিশেষ দল অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-১০ এর সিনিয়র কর্মকর্তারা। অভিযুক্ত রাসেল মাহমুদ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের বাগড়া গ্রামের রুপ মিয়ার ছেলে। তার সঙ্গে আটক অন্য তিন সহযোগী হলেন: মো. ইউসুফ, পিতা: সিদ্দিকুর রহমান, গ্রাম: মানরা, ব্রাহ্মণপাড়া মো. সুজন, পিতা: বারেক মিয়া, গ্রাম: ছাতিয়ানি, ব্রাহ্মণপাড়ামো. সাইফুল ইসলাম সাব্বির, পিতা: শরিফুল ইসলাম, গ্রাম: মাধবপুর, ব্রাহ্মণপাড়াতাদের কাছ থেকে একটি সাদা রঙের পিকআপ ভ্যানসহ মোট ৮২ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়।
র্যাব-১০ এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “আটক রাসেল মাহমুদ একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিন ধরে সে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গাঁজা সংগ্রহ করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে।”
আটকের খবর ছড়িয়ে পড়তেই কুমিল্লার ছাত্রদল ও বিএনপি অঙ্গ-সংগঠনে চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শশীদল ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদে থাকা রাসেলের মাদক সংশ্লিষ্টতায় তার বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফয়সাল আহমেদ ভূঁইয়া বলেন,“রাসেল মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়েছে। আমরা আজ রাতেই জরুরি বৈঠকে বসে তাকে ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার করবো। ছাত্রদলের মতো রাজনৈতিক সংগঠনে এমন অপরাধীর কোনো জায়গা নেই।”
র্যাব জানায়, আটকের পর রাসেল মাহমুদসহ তার সহযোগীদের ঢাকার শ্যামপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলেও জানায় র্যাব।
কুমিল্লার রাজনৈতিক অঙ্গনে এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্র রাজনীতির ছত্রছায়ায় অপরাধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিষয়টি আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মাদকের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িত ছাত্র সংগঠনের নেতারা সমাজে কী বার্তা দিচ্ছে—তা নিয়ে সচেতন মহলে উঠেছে প্রশ্ন। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নিজেদের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান চালানো।