
ডেক্স রির্পোটঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের রূপসদী গ্রামের মতিউর রহমান সবুজ এখন একটি আতঙ্কের নাম। আগে গোপনে বিভিন্ন প্রতারনাসহ অন্যায় করলেও এখন তিনি প্রকাশ্যে তান্ডব চালালেও যেন দেখার কেউ নেই।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এলাকায় সবুজের তান্ডব আরও বেড়ে গেছে। এখন সবুজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের আরেক আতঙ্ক।
বাঞ্ছারামপুরের এই সবুজ ভুয়া দলিল তৈরি করে জমি দখল,শিক্ষা প্রতিষ্টানে হামলা,প্রধানদের হুমকি,প্রতারনা মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা লুট,চাঁদাবাজি,ফসল পুড়িয়ে দেওয়াসহ প্রভৃতি অপরাধ করছেন। এমনকি সম্পত্তির জন্য তার পিতাকে অত্যাচার করে,মৃত্যুর দিকে প্রভাবিত করার অভিযোগও উঠেছে এই সবুজের বিরুদ্ধে। তার পিতা সবুজের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে,জীবদ্দশায় থানায় একটি জিডি ও মামলা করেন।
সবুজ ইতিমধ্যে তার টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছে তার বাবার বড় ভাই জনাব ইউনুছ বি.এস. সি কে। তাঁর সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিতে তাকে নানাভাবে হেয় করার চেষ্টা করছে।
রূপসদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কুদ্দুস মেম্বার,মৃত সুজন এমপির ছোট ভাই শাহনেওয়াজ হাওলাদার,মৃত সুজন এমপির সৎ ভাই আপেল হাওলাদার,রিয়াদ,জনাব হান্নান,শিমুল হাওলাদার,আতাউর রহমান ফয়সালসহ অনেকে জানান,গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এলাকায় সবুজ এখনও আওয়ামীলীগের সেল্টারে তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। যেন সবুজের রাজ্যে সবাই বোবা।
শিক্ষা প্রতিষ্টানে গিয়ে সবুজের চাঁদাবাজি ও হুমকির বিষয়টি এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়ে। বিষয়টি স্থানীয়,জাতীয় গনমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হয়েছে। গনমাধ্যমের বরাতে মতিউর রহমান সবুজ তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে বলেন,ইউনুছ বিএসসি তার জমির মাটি কেটে নিয়েছেন। তার সাথে মামলা-মোকদ্দমার প্রেক্ষিতে তিনি তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছেন। যা মিথ্যা। তিনি গনমাধ্যমে আরও বলেন,আমি আমার প্রতিবাদ আপনার হোয়াসআপে দিচ্ছি,বলে ফোন রেখে দেন।
স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্টানে নিজ নামে কোন জমি না থাকা সত্ত্বেও জোরপূর্বক দাতা সদস্য হতে চান। এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে ঢুকে শিক্ষক ও কলেজ প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। এতে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। স্থানীয়রা আরও বলেন,সবুজ প্রকাশ্যে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ইতোমধ্যে এসব ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
সবুজের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে আরো অনেকের। কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন বলেন,যে দলিলের ভিত্তিতে সে দাতা সদস্য হতে চাইছে,সে দলিল অনুযায়ী সে জমির মালিকই না। এটা নিয়ে দ্বন্ধ সংঘাত কাজ করছে। সে অযাচিত কর্মকান্ড করছে।
রূপসদী গ্রামের সবুজের এক আত্মীয় নিলুফা বেগম বলেন,সবুজের জন্য ক্ষেতে ধান করতে পারি না। জমিতে ধানে আগুন লাগিয়ে দিছে। জমিতে আসতে দেয় না।
একই গ্রামের আতাউর রহমান ফয়সাল বলেন, সবুজ আমার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নিছে বিকাশের ব্যবসা করবে বলে। ৫/৬ মাস পর সিআইডি নিয়ে গেছে বলে আমার টাকাটা মেরে দেয়ার চেষ্টা করে। আমাকে লাভ-আসল কোনটাই দেয়না। টাকা আনতে গেলে সে আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করতে যায় উত্তরা থানায়। যতো ধরনের খারাপ কাজ আছে সেগুলো করে। নিজের চাচা, চাচতো ভাই, সৎ মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সে।
শিমুল হাওলাদার বলেন,সে তার বাপের কাছ থেকে ১৩ শতাংশের কথা বলে ৫ বিঘা জমি নিয়ে গেছে।
সবুজের সৎ মা পারুল আক্তার বলেন, তার বাবারে সে অনেক অত্যাচার করছে। তার টেনশনে কয়েকদিন পর মারা গেছে।
সবুজের ভাই দীপু বলেন, সে আমার আব্বুর কাছ থেকে ১০ শতক জায়গার কথা বলে জালিয়াতি করে সব জমি নিয়ে গেছে।
সবুজের ফুফু সাফিয়া খাতুন বলেন, আমার এক ভাইকে অত্যাচার করে মারছে। জালিয়াতি করে জমি লিখে নেয়ার কারণে আমার ওই ভাই মারা গেছে।
এছারা সম্প্রতি,রূপসদী সুজন স্মৃতি কলেজে হামলা-হুমকীর প্রতিবাদে সবুজ বাহিনীর বিরুদ্ধে সমাবেশ-মানববন্ধন করেছে,শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে স্থানীয়রাও কর্মসূচিতে অংশ নেন। কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সবুজের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।