ব্যাংক খাতে ভয়াবহ লুটপাট: অর্থনৈতিক নিরাপত্তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ,সত্যিকারের উন্নয়ন চাইলে আগে লুটেরা মুক্ত অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে।
লেখক: মোহাম্মদ মাহামুদুল হাসান কালাম
পরিচয়: প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা ও সাংবাদিক,
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেশের ব্যাংক খাতের চরম বিপর্যয়ের চিত্র উঠে এসেছে। গত ১৫ বছরে ২০টি ব্যাংকের প্রায় পৌনে ২ লাখ কোটি টাকার মূলধন লোপাট হয়েছে। এই বিপুল অঙ্কের অর্থ লোপাট শুধু আর্থিক নয়—রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও হুমকিস্বরূপ।
২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে ২০টি ব্যাংকের সম্মিলিত মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। মাত্র তিন মাস আগেও এই ঘাটতি ছিল ৫৩ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। এত দ্রুত সময়ে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি—এই পরিসংখ্যান কেবল অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক ও নৈতিক দুর্নীতির নির্মম দলিল।লেখক নিজে প্রবাসী সাংবাদিক সীমিত বেতনে প্রবাসে চাকরি করে এফডিআর, ডিপোজিট, ডিপিএস, করে প্রায় ২০ লাখ টাকার ও বেশি,ব্যাংককে আটকে আছে। ডিপিএস ভাংতে দিচ্ছেনা ব্যাংক।জুলাই আন্দোলনের সময় দেশে এসে আর প্রবাসে যেতে পারেনি তিনি এতে বিপদে লেখক।
জনতা, কৃষি, রূপালী, অগ্রণী, ইউনিয়ন, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, আইএফআইসি, পদ্মা, বেসিক,ন্যাশনাল ব্যাংকসহ, ২০টির বেশি ব্যাংক আজ মূলধন ঘাটতিতে ধুঁকছে। এর পেছনে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে চলা রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও খেলাপিরা সুবিধাভোগী হয়ে ওঠার সুযোগ।
আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ব্যাংকের সিআরএআর (Capital to Risk-weighted Asset Ratio) হতে হয় কমপক্ষে ১০%। অথচ আমাদের দেশে এই হার নেমে এসেছে ৩.০৮ শতাংশে। এর অর্থ হলো, আমাদের ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক মানের ‘ঝুঁকিহীন’ ব্যাংক নয়—বরং ঝুঁকির কেন্দ্রস্থল।
এ পরিস্থিতির জন্য দায়ীদের মুখোশ উন্মোচন এখন সময়ের দাবি। কারা এই ব্যাংকগুলোর বোর্ডে ছিলেন? কারা খেলাপি হয়ে এখনো সমাজের অভিজাত শ্রেণিতে পরিণত হয়েছেন? জনগণের আমানত লোপাট করে কেউ যেন আর গা ঢাকা দিয়ে থাকতে না পারে।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিনের ভাষায়—“আগের সরকার এসব চিত্র গোপন করেছিল। এখন লুকানো কোনো উপায় নেই।” এই স্বীকারোক্তি রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতারই প্রতিফলন। অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ারের মতে—আজ দেশের প্রায় ৩০টি ব্যাংকের অবস্থাই ভালো নয়।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রয়োজন:
এক) ব্যাংক সংস্কার কমিশন গঠন
দুই) ব্যাংকের বোর্ডে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ
তিন) খেলাপি ঋণকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল
চার) এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বচ্ছ নীতিমালা প্রণয়ন
ব্যাংক বাঁচানো মানে দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা। আর্থিক খাত যদি দুর্বল হয়, তা হলে শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি সবই মুখ থুবড়ে পড়বে।
আমরা চাই, এই ভয়াবহ অর্থনৈতিক লুটপাটের বিচার হোক। জনগণ যেন বুঝতে পারে, এ দেশের মাটি চোরদের নিরাপদ আশ্রয় নয়।
সত্যিকারের উন্নয়ন চাইলে আগে লুটেরা মুক্ত অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে।
এএনবি২৪ ডট নেট"একটি বহুল পঠিত অনলাইন বাংলা সংবাদপত্র,
প্রকাশক, মোহাম্মদ মাহামুদুল হাসান কালাম,
প্রগতি স্বরণী, ঢাকা-১২২৯
+৯৬০৭৩৩৯৬৯১
+৮৮০১৬৪৭০৫৩৪৪৯
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ
ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন। anbnewsbd@gmail.com
২০১২-২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত – এএনবিটোয়েন্টিফোর ডট নেট