মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে জামিন দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২০ মে) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

উল্লেখ্য, ১৮ মে নুসরাত ফারিয়াকে থাইল্যান্ডে যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে গত জুলাই মাসে সংগঠিত বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের সময়কার একটি ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা ছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পরোয়ানা জারি করেছিলেন।

পরদিন (১৯ মে) তাকে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওই দিনই বিকেল আড়াইটার দিকে তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

নুসরাত ফারিয়া একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। রেডিও জকি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে ২০১৩ সালে উপস্থাপনা এবং পরবর্তীতে অভিনয়ের মাধ্যমে বিনোদন জগতে স্থান করে নেন। ২০১৫ সালে ‘আশিকী’ সিনেমার মাধ্যমে তার বড়পর্দায় অভিষেক ঘটে। এরপর তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের প্রযোজনায় নির্মিত প্রায় ২০টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘জিন-৩’ এবারের ঈদে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়।

এদিকে, এই গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিচার প্রক্রিয়াকে প্রহসনে পরিণত করছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “জুলাই অভ্যুত্থানে সরাসরি জড়িত সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ অবাধে দেশত্যাগ করেছেন, অথচ একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে ঢালাওভাবে অভিযুক্ত করে গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সেনানিবাসে আশ্রিত ৬২৬ জনের পরিচয় এখনো গোপন রাখা হয়েছে, কিন্তু জনপরিচিতদের হয়রানি করে বিচার প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার অপচেষ্টা চলছে।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “জুলাই গণহত্যার মূল হোতারা এখনো রাষ্ট্রের ভেতরে ও বাইরে থেকে সক্রিয়। অথচ, তাদেরকে বাদ দিয়ে নুসরাত ফারিয়ার মতো জনপরিচিতদের টার্গেট করে এ ধরনের আইনি পদক্ষেপ জনগণের মধ্যে ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে।”

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকে এ ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিভ্রান্তিকর রাজনৈতিক নাটক বলে উল্লেখ করছেন।