“সাংবাদিক হুমকিতে বিআরডিবি চেয়ারম্যান আখতারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ”

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশকাল: ২০ মে ২০২৫

একজন সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ব্যক্তি হয়ে এমন অমানবিক ও নির্মম আচরণের অভিযোগ উঠেছে যা শুধু প্রশাসনিক নয়, মানবিক এবং আইনি দিক থেকেও চরম লঙ্ঘন। বিআরডিবি চেয়ারম্যান আখতার হোসেনের বিরুদ্ধে তাঁর সহোদর ভাইকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে শিকলে বেঁধে রাখার অভিযোগে এলাকাজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

▶️ ভাইকে ইউরোপ পাঠানোর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ: প্রতিবেদন অনুযায়ী, আখতার হোসেন প্রতারণামূলকভাবে তার ভাইকে ইউরোপে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৪০ লক্ষ টাকা আদায় করেন। কিন্তু পরবর্তীতে প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। এখানেই শেষ নয়—ভাইটি প্রতিবাদ করলে তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেন, এবং পরে ‘পাগল’ বলে প্রচার করে তাকে শিকলে বেঁধে ঘরে আটকে রাখেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন ভয়াবহ চিত্র সচরাচর কেবল চরম দুঃশাসনের দেশেই দেখা যায়।

▶️ পরিবারে বিভাজন, সম্পত্তি দখল ও সামাজিক কলঙ্ক: অভিযোগকারীর দাবি অনুযায়ী, ভুক্তভোগী ভাইয়ের সম্পত্তিও জাল দলিলের মাধ্যমে নিজের ছেলের নামে করে নেন চেয়ারম্যান আখতার হোসেন। এর ফলে পরিবারে চরম বিভক্তি ও সামাজিক সংকট সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা জানান, বিষয়টি শুধু পারিবারিক নয়, এটি একটি বড় ধরনের সমাজিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা এ ঘটনায় বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ।

▶️ মানবিক বিবেক না থাকা কর্মকর্তার শাস্তি হওয়া জরুরি: মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এ ঘটনা যদি সত্য হয়, তবে তা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার এ ধরনের অমানবিক আচরণ প্রশাসন কীভাবে সহ্য করছে, তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একজন সাবেক কর্মকর্তা জানান, “শিকলে বেঁধে রাখার ঘটনা জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার ঘোষণার সরাসরি লঙ্ঘন। প্রশাসন যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তবে এ দায় সরকারের উপরও বর্তাবে।”

▶️ প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা: বিষয়টি একাধিক স্থানীয় গণমাধ্যমে উঠে এলেও প্রশাসন এখনও পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। বরং ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য, তারা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও ন্যায্য সাড়া পাননি। একটি প্রশ্ন জোরালোভাবে উঠে আসছে—কেন আখতার হোসেনের বিরুদ্ধে এত গুরুতর অভিযোগ থাকার পরেও তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন? কী এমন প্রভাব-প্রতিপত্তি তার রয়েছে যার কারণে প্রশাসন পর্যন্ত নির্বিকার?

▶️ আখতার হোসেনের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ: অভিযোগের বিষয়ে আখতার হোসেনের বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তিনি নীরবতা পালন করছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও রহস্যজনক করে তুলছে।

▶️ স্থানীয়দের দাবির ঝড়: ব্রাহ্মণপাড়ার সাধারণ মানুষ বলছেন, “এ ধরনের চেয়ারম্যান থাকলে সমাজে মানুষ নির্যাতনের শিকার হতেই থাকবে। তার অপসারণ ও শাস্তি হওয়া জরুরি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

একজন ভাইকে শিকলে বেঁধে রাখার মতো মধ্যযুগীয় বর্বরতার অভিযোগ কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। এটি মানবাধিকার, নৈতিকতা ও আইনের প্রতিটি স্তরকে লঙ্ঘন করেছে। এখন সময় হয়েছে, প্রশাসন যেন দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়। না হলে, একদিন পুরো সমাজই শিকলে বন্দি হয়ে পড়বে।