
কুমিল্লার বুড়িচং বাজারের পশ্চিম দিকে অবস্থিত তিথী খাল খননের নামে রাস্তা কেটে গভীর গর্ত তৈরি করায় এলাকাবাসীর ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। খাল পরিস্কারের কাজ কিছুদিন আগে শুরু হলেও বর্তমানে তা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। এতে করে খাল যেমন পরিষ্কার হয়নি, তেমনি রাস্তার বড় একটি অংশ ধসে পড়ে স্থানীয়দের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণ মানুষ অভিযোগ করছেন—খাল কাটার নামে গভীর গর্ত করে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে, আর রাস্তার ক্ষতির দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না। খালের প্রাকৃতিক গতিপথ ও জনপথের নিরাপত্তা দুটোই উপেক্ষিত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য অনুযায়ী, খাল খননের নামে যান্ত্রিকভাবে গভীরভাবে মাটি কেটে তোলা হয়েছে। এই মাটি স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে খালের দুই পাশের রাস্তা ভেঙে পড়েছে, কোথাও কোথাও হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে উঠেছে।
একজন বাসিন্দা বলেন,”খাল খননের নামে কিছু ঠিকাদার রাস্তার ধার ঘেঁষে এত গভীর গর্ত করেছে, এখন রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। অথচ কাজ বন্ধ পড়ে আছে। আমরা মাটি বিক্রির গন্ধ পাচ্ছি।”
তিথী খাল এলাকা দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ বুড়িচং বাজার এবং আশপাশের গ্রামগুলোতে যাতায়াত করে। ছাত্রছাত্রী, রোগী, শ্রমজীবী মানুষের জন্য এই রাস্তা এখন একটি দুর্ঘটনার ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
স্থানীয় দোকানদার কামাল হোসেন জানান,”রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় আমার দোকানে এখন ক্রেতা আসে না। অনেক দূর থেকে ঘুরে আসতে হয়। ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে, অথচ কেউ দেখছে না।”
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ বা তদারকি দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, খাল খননের প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও অবহেলার কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী দাবি তুলেছেন, দ্রুত খাল খননের প্রকল্প পূনরায় চালু করতে হবে এবং রাস্তা সংস্কারের জন্য জরুরি উদ্যোগ নিতে হবে। মাটি বিক্রির বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও জোর দাবি উঠেছে।
বুড়িচংয়ের তিথী খালের এই অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা যেন কুমিল্লার উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর এক চিত্র। উন্নয়নের নামে ভোগান্তি বাড়লে সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়ে যায়। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে একদিকে খাল পরিষ্কার হয়, অন্যদিকে রাস্তার ভাঙনে জনদুর্ভোগ না বাড়ে।