শাহবাগকে কেন্দ্র করে আবার আন্দোলনের দানা বেঁধেছে। এ আন্দোলনের মূল দাবি হচ্ছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। বাংলাদেশের প্রতিটি মুসলমান জুলুমের শিকার। তাদের সুপ্ত অভিপ্রায় হচ্ছে, অবশ্যই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক। তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করা হোক।
এখন প্রশ্ন হলো সুদীর্ঘ প্রায় ৯ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও বাংলাদেশ সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেনি কেন? এ প্রশ্নের জবাবটি সরকারের স্পষ্ট করা উচিৎ।
এনসিপি গঠিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত এ সংগঠনটি বাংলাদেশের মুসলমান কওমের পক্ষে ও বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে উল্লেখযোগ্য তেমন কোন ভূমিকাই রাখতে পারেনি। এখন তারা আবার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। আমরা তাদের সফলতা কামনা করছি। কিন্তু প্রশ্ন হলো বাংলাদেশে এখন করিডোর ইস্যুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হওয়ার পথে; এই বিষয়ে মোটেও তাদের কোন বক্তব্য বা পদক্ষেপ নেই কেন?
কোন কোন মহল তো এটাও মনে করে যে, করিডোর ইস্যুতে বড় ধরণের আন্দোলন থেকে জনগোষ্ঠীর দৃষ্টি সরিয়ে রাখার জন্যই মূলত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপি মাঠে নেমেছে। যদি এটাই হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই এমসিপির দায়িত্বশীল সমন্বয়ক এবং নেতাদের নাম ইতিহাস খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করবে।
আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, অতি উৎসাহী ইসলামপন্থী কিছু আলেম-উলামাও এ আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেছে এবং অনেকে স্বশরীরে অংশগ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে আমি আলেম-ওলামা ও ইসলাম পন্থীদের কাছে তাদের দ্বীনি ভাই হিসেবে করজোড়ে অনুরোধ করবো, যেকোনো আন্দোলনে অগ্র-পশ্চাৎ চিন্তা না করে ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত আপনারা নিবেন না। কারণ, বাংলাদেশের দুটো বিষয় এখন Talk of the country.
• একটি হচ্ছে বিতর্কিত নারী কমিশন,
• আরেকটি হচ্ছে করিডোরের ইস্যু।
অথচ, এনসিপির একটি দায়িত্বশীল সংগঠন হয়েও, এই দুটি বিষয়ের একটি বিষয়েও তারা বক্তব্য স্পষ্ট করেনি এবং এক্ষেত্রে তাদের কোনো ভূমিকাও নেই। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে সময় ও সুযোগে নিষিদ্ধ করার জন্য জেলাব্যাপী, বিভাগব্যাপী সমাবেশের মাধ্যমে, জনমতের প্রকাশ ঘটিয়ে সরকারকে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে বাধ্য করা যেতেই পারে। কিন্তু করিডোর ইস্যু ও বিতর্কিত নারী কমিশনের প্রতিবেদনের প্রতিবাদে এনসিপি কোন আন্দোলন করেনি বা আন্দোলনের ডাকও দেয়নি। ৩ রা মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতের মহাসম্মেলনে যে দাবিগুলো সরকারকে জানানো হয়েছে, এর মধ্যে একটি দাবি ছিল বিতর্কিত নারী কমিশনকে বাতিল করা। তারা সেটার বিরোধিতা করেছে এবং তাদের অনেক নেতা সরাসরি বিতর্কিত নারী কমিশনের পক্ষ নিয়েছে।
অতএব, আলেম-উলামা ও পীর-মাশায়েখগণ এ আন্দোলনে যোগ দিয়ে কি ধরনের ফলাফল আশা করতে পারে? ৫৩ বছরের সুদীর্ঘ ইতিহাস আমাদেরকে এটাই ছবক দেয় যে, প্রতি যুগের প্রতি ক্ষণে আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখদের পবিত্র রক্তের উপর পা দিয়ে তারা ক্ষমতায় গিয়ে ইসলামের সুমহান স্বার্থ রক্ষা করে নি, মুসলমানদের দাবি-দাওয়া আদায় করেনি এবং দেশের স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়নি।
অতএব, আলেম-ওলামা, পীর মাশায়েখদের এবং ইসলামপন্থীদের যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের আন্দোলন করতেই হয়, তাহলে সেটা হতে হবে স্বতন্ত্র প্ল্যাটফর্মে। এটি আমার পক্ষ থেকে একটি কান্ডারী হুঁশিয়ারি। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে হেদায়েত এর উপরে রাখুন।
এএনবি২৪ ডট নেট"একটি বহুল পঠিত অনলাইন বাংলা সংবাদপত্র,
প্রকাশক, মোহাম্মদ মাহামুদুল হাসান কালাম,
প্রগতি স্বরণী, ঢাকা-১২২৯
+৯৬০৭৩৩৯৬৯১
+৮৮০১৬৪৭০৫৩৪৪৯
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ
ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন। anbnewsbd@gmail.com
২০১২-২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত – এএনবিটোয়েন্টিফোর ডট নেট