মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১১, সিপিসি-২ এর দুটি পৃথক মাদকবিরোধী অভিযানে কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানার দুটি এলাকা থেকে ৩০ কেজি গাঁজা ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও একটি কাভার্ড ভ্যানসহ ৩ জন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

র‍্যাব জানায়, প্রথম অভিযানটি পরিচালিত হয় ৫ মে ২০২৫ ইং তারিখ রাতে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর দক্ষিণ থানাধীন মধ্যম রাজাপুর এলাকায় র‍্যাব-১১ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় মোঃ মীর হোসেন (৪০) ও মোঃ আলমগীর (৩৮) নামক দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। তাদের হেফাজত থেকে ১০ কেজি গাঁজা এবং মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

পরবর্তীতে, দ্বিতীয় অভিযানটি পরিচালিত হয় ৬ মে ২০২৫ ইং তারিখ রাতে সদর দক্ষিণ থানাধীন সোয়াগাজী বাজার এলাকায়। সেখানে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মোঃ নূর উদ্দিন (৩৩) নামক একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-১১ এর আভিযানিক দল। তার হেফাজত হতে ২০ কেজি গাঁজা এবং মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি কাভার্ড ভ্যান উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব-১১ সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত তিন আসামি—মোঃ মীর হোসেন, পিতা আবুল কাশেম, গ্রাম ঘোষপা, থানা বরুড়া, কুমিল্লা; মোঃ আলমগীর, পিতা মৃত লাল মিয়া, গ্রাম বাঁশপুর, থানা বরুড়া, কুমিল্লা; এবং মোঃ নূর উদ্দিন, পিতা মোঃ নুরুল ইসলাম, গ্রাম চর বেদমা, থানা রামগতি, লক্ষীপুর—স্বীকার করে যে তারা দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গাঁজা সংগ্রহ করে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারি ও খুচরা দরে বিক্রি করে আসছে।

র‍্যাব-১১ জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে অদ্যাবধি তারা দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ধারাবাহিকভাবে মাদক, অস্ত্র, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ ও অন্যান্য অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এসেছে। এই সময়ের মধ্যে চাঞ্চল্যকর অপরাধী ৮৩ জন, হত্যা মামলায় ১০৬ জন, ধর্ষণ মামলায় ৪৮ জন, অস্ত্র মামলায় ১৩ জন, মাদক মামলায় ২৭৬ জন, আরসা সদস্য ১৫ জন, ছিনতাইকারী ও ডাকাত ৫৫ জন এবং বিভিন্ন অপরাধে আরও ২৭৪ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১২৮৫ রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, এবং অপহরণকারী ৪২ জনকে গ্রেফতার করে ৩৫ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে।

র‍্যাব-১১ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাদকের মতো সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।