মোঃ শাহজাহান বাশার,স্টাফ রিপোর্টার:-
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত দিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ভারতীয় চোরাকারবারী বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের ঘটনা গোটা সীমান্ত এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সীমান্তে চোরাচালান রোধে নিয়োজিত বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এই ঘটনাকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে এবং ব্যাপক অনুসন্ধান ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে। বিজিবির ধারাবাহিক অভিযান ও নজরদারির ফলেই রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ভারতীয় নাগরিককে আটক করা সম্ভব হয়েছে। আটক ব্যক্তির নাম সুজন বর্মন, তিনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা এলাকার বটতলী গ্রামের মঙ্গল বর্মনের পুত্র।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একটি সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের সদস্যরা কসবা সীমান্ত ব্যবহার করে অবৈধভাবে ভারতীয় পণ্য ও মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে আসছে। বিজিবির সীমান্ত টহল দল এবং গোয়েন্দা ইউনিটের নজরে আসে যে, একটি চক্র ভারতীয় এক চোরাকারবারীকে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঢোকানোর পরিকল্পনা করছে। পরে ৫ মে দুপুরে বিজিবি নিশ্চিত হয় যে, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই ব্যক্তি মগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে একটি বিশেষ টহলদল ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং নির্দিষ্ট হাসপাতাল থেকে সুজন বর্মনকে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আটক করে।
পরে তাকে রাজধানীর মগবাজার থানা পুলিশের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়। থানা সূত্রে জানা গেছে, সুজন বর্মনের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে এবং তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশি ও আন্তর্জাতিক চক্রের তথ্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। এ ঘটনার মাধ্যমে চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির দক্ষতা ও তৎপরতা আবারো প্রমাণিত হলো বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
উল্লেখ্য, কসবা সীমান্ত পূর্বে থেকেই চোরাচালান চক্রের জন্য কুখ্যাত। বিশেষ করে মাদক, ভারতীয় শাড়ি, প্রসাধনী সামগ্রী, ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্য এখানে অবৈধভাবে প্রবেশ করে থাকে। সীমান্তে নজরদারি জোরদার করার ফলে সম্প্রতি বিজিবি একাধিক অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ পণ্য জব্দ করে। এবারের ঘটনা সেই চোরাচালান চক্রের নতুন কৌশলকে সামনে আনলো বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, সেইসব ব্যক্তি ও সিন্ডিকেটের খোঁজে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে কন্ট্রোল রুম, আধুনিক মনিটরিং সিস্টেম এবং ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহারের কথাও ভাবা হচ্ছে।
এদিকে, জননিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতীয় চোরাকারবারীর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাংলাদেশে প্রবেশ এবং ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য এক ধরনের সতর্ক সংকেত। এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে, সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্র শুধু সীমান্তেই সীমাবদ্ধ নয়, তারা রাজধানীর কেন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত নিজেদের প্রভাব বিস্তার করছে।
সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই ঘটনা আবারো প্রমাণ করলো যে, চোরাচালান কোনো স্থানীয় সমস্যা নয়; এটি একটি আন্তঃদেশীয় সংঘবদ্ধ অপরাধ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সমাজের সচেতন নাগরিকদেরও উচিত এসব অপরাধ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখা। বিজিবির এই সফল অভিযান অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে এবং এই ধারা অব্যাহত থাকুক—এটাই জাতির প্রত্যাশা।
এএনবি২৪ ডট নেট"একটি বহুল পঠিত অনলাইন বাংলা সংবাদপত্র,
প্রকাশক, মোহাম্মদ মাহামুদুল হাসান কালাম,
প্রগতি স্বরণী, ঢাকা-১২২৯
+৯৬০৭৩৩৯৬৯১
+৮৮০১৬৪৭০৫৩৪৪৯
বি: দ্র: প্রকাশিত সংবাদে কোন অভিযোগ
ও লেখা পাঠাতে আমাদের ই-মেইলে যোগাযোগ করুন। anbnewsbd@gmail.com
২০১২-২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত – এএনবিটোয়েন্টিফোর ডট নেট